ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে দম্পতিকে কুপিয়ে জখম

মামলা নেয়নি পুলিশ ॥ কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২১ এপ্রিল ২০১৭

মামলা নেয়নি পুলিশ ॥ কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ২০ এপ্রিল ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও পরিবারের বৃদ্ধ মা-বাবাকে কুপিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় থানায় মামলা করতে গেলে এসআইয়ের দাবিকৃত ২০ হাজার টাকা না দেয়ায় তা নথিভুক্ত করেনি। একই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের সঙ্গে আপোসের জন্য চাপ দিচ্ছে বলে রয়েছে অভিযোগ। নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান বাদী। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ভূলতা ইউনিয়নের আতলাশপুর এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। হামলার শিকার হওয়া আতলাশপুর এলাকার জমির উদ্দিনের মেয়ে নাসরিন আক্তার জানান, একই এলাকার আলমগীর, জাহাঙ্গীর, আরিফ, রাশিদুলসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে তার পিতা জমির উদ্দিনের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। এ টাকা না দেয়ার প্রথমবার গত ১৬ এপ্রিল ওই সন্ত্রাসীরা নাসরিনদের বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়িঘর ভাংচুর শুরু করে। এ সময় তার মা মালেকা বেগম ভাংচুরে বাধা প্রদান করলে সন্ত্রাসীরা তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। মালেকা বেগমের চিৎকারে জমির উদ্দিন বাঁচাতে এগিয়ে এলে চাঁদাবাজরা তাকেও কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আতহদের ঢাকা মেডিক্যালে রেফার্ড করলেও টাকার অভাবে বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালেই চালাচ্ছেন চিকিৎসা। এদিকে আহতের মেয়ে আইনী সহায়তা নিতে থানায় গেলে কর্তব্যরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) সবজেল হোসেন প্রথমে বাদিনীর কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিতে পারায় গত ১ সপ্তাহেও থানায় অভিযোগটি নথিভুক্ত করেনি পুলিশ। এদিকে থানায় মামলা নথিভুক্ত না করার সুযোগে সন্ত্রাসীরা ফের বৃহস্পতিবার সকালে একই কায়দায় বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির আসবাবপত্রাদি ভাংচুর করে ও ২টি টিনশেড ঘর ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়। বাড়িতে প্রবেশ করলে পরিবারের লোকজনকে কেটে টুকরো করে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দেবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। এমন অবস্থায় পরিবারের লোকজন ভয়ে বাড়ি ছাড়া রয়েছে। অপরদিকে আহত জমিরউদ্দির ও তার স্ত্রী মালেকা বেগম ভয় নিয়েই চিকিৎসা নিচ্ছেন রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাদিনী নাসরিন বেগম টাকা জোগাড় করতে কিডনি বিক্রি করার চেষ্টায় ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে গিয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলেও তা নথিভুক্ত করেননি থানা পুলিশ। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রূপগঞ্জ থানায় দারোগা সবজেল হোসেন বলেন, বাদিনীকে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছি মাত্র। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলব।
×