ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিকাশ রহমান

‘মেলাফিসেন্ট টু’ ছবিতেই কি ইতি!

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২০ এপ্রিল ২০১৭

‘মেলাফিসেন্ট টু’ ছবিতেই কি ইতি!

মিসেস স্মিথ নামে খ্যাত অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলি অভিনয়ে আর আগ্রহী নন। এবারে লেখালেখি ও চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজে হাত দেবেন তিনি আর এটা যদি সত্যি হয় তবে ‘মেলাফিসেন্ট টু’ হবে তার অভিনীত শেষ সিনেমা। তিনি তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, দুইবার স্ক্রিন এ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। ১৯৯৮ সালে তিনি এইচবিও প্রযোজিত চলচ্চিত্র জিয়াতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন, এবং এখানে তিনি সুপারমডেল জিয়া কারাঞ্জির ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবিটির মুখ্য বিষয়গুলো ছিল যৌনতা, মাদক, আবেগ, এবং মাদকাসক্তির কারণে কারাঞ্জির শারীরিক ও পেশাগত জীবনের ক্রম অধঃপতন; অবশেষে সবকিছু থেকে তাঁর হাল ছেড়ে দেওয়া ও এইডসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ। জোলি তাঁর চরিত্রাভিনয়ে ছিলেন বিপ্লবী, তাঁর অংশগুলো তিনি চিত্রিত করেছেন এক ধরনের দৃঢ়তা, আকর্ষণীয়তা এবং বেপরোয়াত্বের সঙ্গে। চলচ্চিত্রটির জন্য পরবর্তী বছরে জোলি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন এবং এমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। সেই সঙ্গে তিনি তাঁর প্রথম স্ক্রিন এ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কারটিও লাভ করেন। জোলি প্রভাবিত হয়েছিলেন লি স্ট্যাসবার্গের মেথড এ্যাক্টিং দ্বারা। তাই তাঁর প্রথম দিকের ছবিগুলোতে কাজ করার সময় তিনি ছবির চরিত্রটির মতো জীবনযাপন করতেন। এই সিনেমাটিতে অভিনয় করার পর তিনি অনুভব করছিলেন যে তাঁর আর কিছুই দেবার নেই। তাই তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে চলচ্চিত্র পরিচালনার ওপর পড়াশোনা শুরু করেন এবং লিখিত ক্লাসগুলোতে নিয়মিত অংশ নিতে থাকেন। ইনসাইড দি এ্যাক্টরস স্টুডিও নামে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করেন এভাবে যে ‘আমাকে আবার টেনে তোলার জন্য এটাই ভালো উপায়।’ তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে হ্যাকারস, লারা ক্রফ্ট: টুম্ব রেইডার, এ্যানিমেশন চলচ্চিত্র কুং ফু পান্ডা ইত্যাদি। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সামাজিক কর্মকা-ে নিজেকে যুক্ত করেন। যুদ্ধে যৌন-সহিংসতা বন্ধের উদ্দেশ্যে কাজ করার শপথ নিয়েছিলেন হলিউড অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলি এবং ব্রিটিশ পররাষ্ট্র সচিব উইলিয়াম হ্যাগ। নাইজেরিয়ায় ২০০ জন স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ, পাকিস্তানে গর্ভবতী নারীকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা, ভারতে দুই নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা এই সব ঘটনা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। জোলির মতে প্রাচীনকাল থেকেই যুদ্ধে ধর্ষণ একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। ২০০১ সালে ইউএনএইচসিআর-এর পক্ষ থেকে সিয়েরা লিয়নে সফরে যাওয়ার মধ্য দিয়ে জোলি তার মানবতাবাদী কাজকর্ম শুরু করেন। সিয়েরা লিয়নে যুদ্ধে প্রায় ৬০০০ নারী ধর্ষিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। অভিবাসী ও শরণার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন অস্কার বিজয়ী তারকা অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা জোলি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন নির্বাহী আদেশের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। একই সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত শরণার্থী ও চরমপন্থীদের রসদ যোগাবে বলে মনে করেন জোলি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রেড পিটের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে খ্যাতিমান এ মার্কিন অভিনেত্রীর। জোলির ছয় সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে তিন জন সন্তানকে তিনি বিভিন্ন আশ্রম কেন্দ্র থেকে নিয়ে লালন পালন করছেন। বলিষ্ট অভিনেত্রীর পাশাপাশি তিনি হচ্ছেন একজন মানবিক নারী।
×