ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবাধে নকল সুবিধা ॥ প্রতিদিন ২০ টাকা

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১১ এপ্রিল ২০১৭

অবাধে নকল সুবিধা ॥ প্রতিদিন ২০ টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১০ এপ্রিল ॥ ধামইরহাটে বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা গ্রহণ চলছে। অর্থের বিনিময়ে নকলে সহায়তার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে পরীক্ষার পরিদর্শক থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, চলতি মাসের ২ এপ্রিল থেকে সারাদেশের মতো ধামইরহাট উপজেলার জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে ধামইরহাট টেকনিক্যাল কলেজ, ধামইরহাট সিদ্দিকীয়া ফাজিল মাদ্র্রাসার বিএম শাখা ও জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজের বিএম শাখার এইচএসসি বিএম শাখার পরীক্ষা চলছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রকৌশলী সুশীল কুমার পাল স্বাক্ষরিত পরীক্ষা সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশাবলীর মাধ্যমে কোন পরীক্ষার্থী নিজ কলেজ অথবা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দিতে পারবে না বলে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ বোর্ডের নির্দেশ অমান্য করে একই প্রতিষ্ঠানের বিদ্যালয় শাখায় ভিন্ন ভেন্যু দেখিয়ে বিএম শাখার পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিচ্ছে। সেখানে নিজ প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা কেন্দ্র্রে মুখোমুখি বসে একে অন্যের খাতা দেখাদেখি হচ্ছে। অথচ গত কয়ের বছর পূর্বে ওই কেন্দ্রের পরীক্ষা ধামইরহাট এম, এম ডিগ্রী কলেজ ও হরিতকীডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষায় বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য প্রশাসনকে ম্যানেজ করার কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা হারে উঠানো হচ্ছে। আর এ কাজে সহায়তা করছে জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ কাফি এবং ধামইরহাট টেকনিক্যাল কলেজের সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম। কেন্দ্রটি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে হওয়ার ওপর মহলের তেমন কোন নজর নেই। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা প্রহল্লাদ কুমার কুন্ডু পরীক্ষা হলে না গিয়ে অধিকাংশ সময় অধ্যক্ষের তিনি মোবাইলে কথা বলে এবং টিভি দেখে সময় কাটিয়ে দেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ইংরেজী ২য় পত্রের পরীক্ষায় অবাধে নকল করার প্রতিবাদ করায় হল পরিদর্শক ধামইরহাট টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষক মুক্তিয়ার রহমানকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। জেনারেল কলেজের কয়েক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কারিগরি কেন্দ্রে ব্যাপক নকল চলায় সাধারণ কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জগদল আদিবাসী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ কেন্দ্র সচিক ইলিয়াস আলম বলেন, একই প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা স্কুল শাখায় পরীক্ষা দিলেও অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা পরিদর্শকের কাজ করছে। আর এটি করা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশেই। এতে বোর্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
×