ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘মেসেজ ক্লিয়ার কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে’

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২৯ মার্চ ২০১৭

‘মেসেজ ক্লিয়ার কুসিক নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার॥ মেসেজ ক্লিয়ার, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। দুই রাজনৈতিক দলও চায় এই নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি হোক। কমিশনার সবার জন্যই সমান সুযোগ তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসি সচিব মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আশাবাদী। সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল বৃহস্পতি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ইতোমধ্যে ইসির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে সব ধরনের প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অননুমোদিত সব যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কমিশনের যথাযথ পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল ও সোমবার বিএনপি প্রতিনিধি দল পৃথকভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এর পরই দুপুরে নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে কুমিল্লার ভোটের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে কথা বলেন। মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে সাক্ষাত করে নির্বাচন নিয়ে ইসির পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ দায়ের করেন। তারা বলেন, নিরপেক্ষতা দেখাতে গিয়ে ইসি ‘নিষ্ঠুর আচরণ’ করছে আওয়ামী লীগের প্রতি। অপরদিকে সোমবার বিএনপি সাক্ষাত করে বলে, ক্ষমতাসীনরা সেখানে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। স্থানীয় প্রশাসন নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ দাখিল করে তারা। এর পরিপেক্ষিতে ইসি সচিব বলেন, উভয় দলেরই কিছু অভিযোগ রয়েছে। সেগুলো দেখা হচ্ছে। বিএনপির অভিযোগ কুমিল্লায় আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৭ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করছেন। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আচরণবিধি প্রতিপালন সবার জন্য সমান। দুপক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। কমিশন কারও প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করছে না। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এই নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী মালামাল মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার বিষয়ে ইসি আন্তরিক। শেষ মুহূর্তে এসে প্রিসাইডিং অফিসারের পরিবর্তন হলে নির্বাচনে কোন বিঘœ ঘটবে কিনা সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচনে এ ধরনের বিষয়ে কমিশন আগে থেকেই প্রস্তুত থাকে। আমাদের প্যানেল প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দেয়া আছে। এসব ক্ষেত্রে কোন কিছু হলে তারা দায়িত্ব পালন করবে, উল্লেখ করেন। মাঠে ৪ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ॥ ইসি সচিব জানান, কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে তৎপর। আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর নির্দেশনাও রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ হাজার ৮৩৬ সদস্য নিয়োজিত। ৩৬ নির্বাহী হাকিম ও ৯ বিচারিক হাকিম রয়েছে। এছাড়া ইসির নিজস্ব পর্যবেক্ষক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থার সদস্য ও সাংবাদিকরা ভোট পর্যবেক্ষণে থাকছে। সাংবাদিক কার্ড নিয়ে অব্যবস্থাপনা আগামীকাল বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাংবাদিকদের পাসকার্ড বিতরণে চরম অব্যবস্থাপনার পরিচয় দিয়েছে ইসি। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০টি সংস্থার ৪শ’ পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের ৫শ’ সাংবাদিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করেছে ইসিতে। কিন্তু কার্ড বিতরণে দেখা দেয়া চরম অব্যবপস্থাপনা। কার্ড বিতরণে অব্যবস্থাপনার কারণে যেসব সাংবাদিক নির্বাচন কাভার করতে কুমিল্লায় যাবেন তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়বেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তারা জানতে পারেনি কখন এই কার্ড বিতরণ করা হবে। ইসি এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। শেষ পর্যন্ত ইসির জনসংযোগ শাখা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কার্ড বিতরণ করা হয়। দেরিতে কার্ড বিতরণের কারণে অনেক সাংবাদিক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করে কার্ড সংগ্রহ করেন। অথচ এর আগে কখনও সাংবাদিকরা কার্ড সংগ্রহ করতে এমন অব্যবস্থাপনার শিকার হয়নি। জানতে চাইলে এ বিষয়ে ইসি সচিব আব্দুল্লাহ বলেন, কমিশনের অনুমোদনের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে। ভোটের এখনও একদিন বাকি। ভোটের আগের দিন পেলেও কোন সমস্যা হবে না। সাংবাদিকদের গাড়ির স্টিকার যাতে অন্যরা ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়েও নজর রাখতে বলা হয়েছে বলে ইসি সচিব জানান। তিনি বলেন, কমিশনের কাছে অভিযোগ এসেছে, অতীতে অনেক সময় সাংবাদিকদের গাড়িতে রাজনৈতিক দলের লোকজন থাকে। সাংবাদিকদের গাড়িতে যাতে সাংবাদিকরা থাকেন, অসাংবাদিকরা ব্যবহার না করে, সে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।
×