ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুনামগঞ্জ উপনির্বাচন

সুরঞ্জিতপত্নীর বিপক্ষে প্রবাসী ধনকুবের, সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদী ইসি

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ২৯ মার্চ ২০১৭

সুরঞ্জিতপত্নীর বিপক্ষে প্রবাসী ধনকুবের, সুষ্ঠু নির্বাচনে আশাবাদী ইসি

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ২৮ মার্চ ॥ আর মাত্র একদিন বাকি। জমে উঠেছে সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে শেষ মুহূর্তে উপনির্বাচনের প্রচার। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে হাওড় অধ্যুষিত দুই উপজেলা। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ পদভারে মুখরিত দুই উপজেলার হাটবাজার, ঘরবাড়ি ও মাঠ-প্রান্তর। দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সমর্থনের আশায়। সেই ’৭০-এর নির্বাচন থেকে এ আসনে বরাবর নির্বাচন হয়ে আসছে সুরঞ্জিত-বনাম এন্টি সুরঞ্জিত। আগামী ৩০ মার্চ এ আসনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আশাবাদী নির্বাচন কমিশন। দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, বিগত ৪৭ বছর ধরে দিরাই-শাল্লার নির্বাচন মানেই একজন সুরঞ্জিত। তাঁকে কেন্দ্র করে এ আসনে নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়। ব্যক্তি সুরঞ্জিতের পক্ষে এবং বিপক্ষে মূলত এ আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর পক্ষের লোকজন শক্তিশালী হলেও তিনিই বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এমনটাই চলে আসছে। দিরাই-শাল্লার রাজনৈতিক ময়দানে দাপুটে এই নেতাবিহীন এবারই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে ৩০ মার্চ। বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে সুনামগঞ্জ-২ আসন শূন্য হয়। এই আসনে সুরঞ্জিতপতœী ড. জয়া সেনগুপ্তা (নৌকা) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন এক সময় সুরঞ্জিত সেনের অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী কুয়েত প্রবাসী ধনকুবের সায়েদ আলী মাহবুব হোসেন রিজু (সিংহ)। তাকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি। সঙ্গে রয়েছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর হাওড় অধ্যুষিত এ আসনটিতে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা, সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জের সংসদ সদস্যরা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ জেলার প্রায় সকল সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা পড়ে রয়েছেন দিরাই ও শাল্লা উপজেলার হাটবাজার ও গ্রামে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মুক্তিযোদ্ধা বললেন, ভোট দিব আমরা সাধারণ কর্মী-সমর্থক ভোটাররা। এ আসনের ভোট আদায়ে এত বেশি কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা এসেছেন য়ে আমরা সাধারণ ভোটার, কর্মী-সমর্থকরা কোন পাত্তাই পাচ্ছি না। যাদের কোন ভোট নেই তারা এখানে এত প্রভাব দেখাচ্ছে যে, আমরা কিছুই না। এতে বিএনপি সমর্থকসহ সাধারণ ভোটাররা বেশিরভাগ নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে ৩০ মার্চ নির্বাচনী ফল পাল্টে যেতে পারে। এদিকে স্বামীর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তের প্রত্যয় ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. জয়া সেনগুপ্তা বললেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়েছেন স্বাধীন দেশ আর তার কন্যা আমাদের নিয়ে গেছে উন্নয়নের মহাসড়কে। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রাকে গতিশীল রাখতে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে সব বিভেদ ভুলে বঙ্গবন্ধুর নৌকা শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার পক্ষে কাজ করে ৩০ মার্চ বিজয়ী করবেন। দিরাই-শাল্লা মানুষের জন্য কাজ করে যাবার অঙ্গীকার নিয়ে বিদেশ থেকে এসেছি উল্লেখ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়েদ আলী মাহবুব হোসেন (রিজু) বলেন, দিরাই ও শাল্লার উন্নয়ন নিয়ে আমার কিছু কর্মসূচী আছে কর্মপরিকল্পনা আছে তা নিয়ে ভোটারের দ্বারে দ্বারে সমর্থনের আশায় যাচ্ছি। তারাই গত চার দশকের উন্নয়ন কর্মকা- মূল্যায়ন করে ৩০ তারিখ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন।
×