ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সামনে এবার রঙিন পোশাকের লড়াই

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২২ মার্চ ২০১৭

সামনে এবার রঙিন পোশাকের লড়াই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেস্ট সিরিজ শেষ। নিজেদের শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে। টেস্ট সিরিজ ১-১ ড্র করেছে। টেস্ট জয়ের আনন্দ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে না হারার উচ্ছ্বাস এখন পেছনে ফেলে নতুন মিশনে নামতে হবে। সামনে এবার ওয়ানডে সিরিজের মিশন। সেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নামার আগে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে বাংলাদেশ দল। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্টস একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের ঝালিয়ে নেবেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ম্যাচটি কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাসাদা স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা রয়েছে। ম্যাচটিতে প্রস্তুতি সেরে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে নামবে মাশরাফিবাহিনী। ২৫ মার্চ ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে খেলবে। একই স্টেডিয়ামে ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি ম্যাচই দিবারাত্রিতে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেটি হবে কলম্বোয় ১ এপ্রিল। ম্যাচটি শুরু হবে সকাল সাড়ে নয়টায়। এ সিরিজের উদ্দেশে কলম্বোয় পুরোদমে চলছে অনুশীলন। তবে শততম টেস্টে যারা খেলেছেন, তারা অনুশীলনে যোগ দেননি। ছুটিতে আছেন। প্রস্তুতি ম্যাচে যোগ দেবেন। আর আজকের প্রস্তুতি ম্যাচটি দিয়েই আসলে নির্ধারিত ওভারের ক্রিকেটের ভাবনাও মাথায় ঢুকিয়ে নেবেন। এই প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেই তাই নির্ধারিত ওভারের মিশনও শুরু হয়ে যাবে। টেস্ট সিরিজে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হারলেও দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিয়েছে। টেস্টে বাংলাদেশ উন্নতির মধ্যে রয়েছে। সেই তুলনায় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ শক্তিশালী দলই। পাশাপাশি টেস্টের জয়ও অনুপ্রেরণা জোগাবে। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তো ওয়ানডেতে জয়ের আশা আগেই করেছেন। বলেছেন, ‘সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ জেতা সম্ভব। আমরা যে কয়েকটা সিরিজ আগে জিতেছি বেশিরভাগই তিন বিভাগে ভাল করে। যেসব ম্যাচে হেরেছি সেগুলোয় তিন বিভাগেই খারাপ করেছি। আমাদের যে দল, সব বিভাগে ভাল করতে পারলে সিরিজ জেতা অবশ্যই সম্ভব।’ শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে দেশ ছাড়ার আগে মাশরাফি সিরিজ জয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে অনুশীলন শেষে সবার আগে শততম টেস্ট জয় ড্রেসিং রুমে বসে দেখার অনুভূতির কথা জানিয়েছেন, ‘শততম টেস্ট আমরা জিততে পেরেছি। এটা বাংলাদেশের জন্য বিশাল বড় ব্যাপার। আমি নিশ্চিত, যারা ছিল মাঠে, সবার জন্যই শততম টেস্ট ম্যাচটা জিততে দেখা আনন্দের ব্যাপার। আমরা ওয়ানডে খেলতে এসেছি, ড্রেসিং রুমে ঢোকার সুযোগ হয়েছিল। ওদের অনুভূতিটা কেমন ছিল সেটা দেখতে পেরেছি। আমি বলব যে, আমরা খুব ভাগ্যবান।’ বাংলাদেশের শততম ওয়ানডে হয়েছিল ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ছিল। সেই ম্যাচটিতেও জিতেছিল বাংলাদেশ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ১৫ রানের সেই জয়ে মাশরাফি ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে অপরাজিত ৩১ রান করেছিলেন যা ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এরপর বল হাতে শুরুতেই ভারতের রানের খাতা খোলার আগেই বীরেন্দর শেবাগকে বোল্ড করে দেন। এরপর মহেন্দ্র সিং ধোনির উইকেটটিও তুলে নেন। সেই ম্যাচটিতে জেতান মাশরাফিই। ২০০৯ সালের পর আর টেস্ট খেলতে না পারায় এবার ড্রেসিং রুমে বসে শততম টেস্টে দলের জয়ে সাক্ষী হলেন। তাতেও ভীষণ আনন্দিত মাশরাফি। এবার তার নেতৃত্বে ওয়ানডেতে মাঠে নামার পালা। মাশরাফি তাই জানিয়ে দিলেন একেক করে ওয়ানডে সিরিজ নিয়ে তার ভাবনার কথা। টেস্টে জয়ের পর যে ওয়ানডে নিয়ে প্রত্যাশা অনেক বেশি বেড়ে গেছে, তা বুঝতে পারছেন মাশরাফি। বলেছেন, ‘টেস্টের চেয়ে ওয়ানডেতে অবশ্যই প্রত্যাশা বেশি। আমাদের মতো সমর্থকদেরও তাই। লাল বল থেকে সাদা বলে আসা, সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়ার ব্যাপার। প্রত্যাশা তো অবশ্যই আছে। তার জন্য ভাল খেলতে হবে। টেস্টেও আমরা শুরু থেকে ভাল খেলেছি, ফলাফল ভাল হয়েছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘যদি ওয়ানডে স্কোয়াড দেখেন, বেশিরভাগ টেস্ট স্কোয়াডের খেলোয়াড়। তারা তাই মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে। কারণ বড় ফরমেটে বড় একটা ম্যাচ জিতেছে। তারপরও আমার মনে হয় ব্যাটিংটা একটু চিন্তা থাকতে পারে। কারণ ওদের কয়েকজন ভাল বোলার আছে। আর আমরা টানা পাঁচটা টেস্ট খেলার পর সাদা বলে খেলব। এখন যেটা হবে, আমাদের রান বের করতে হবে। ওদের কিছু ‘ক্রিটিক্যাল’ বোলার আছে, তাদের কাছ থেকে রান বের করাটা কঠিন হবে। মানসিকভাবে নির্ভার থাকলে, শুরুটা ভাল করতে পারলে সব ভাল হবে।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৩৮টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। ৩৩টিতে হারের বিপরীতে ৪টি ম্যাচে জিতেছে। রেজাল্ট হয়নি একটি ম্যাচে। নিজেদের মাটিতে তিন ম্যাচে জেতার বিপরীতে শ্রীলঙ্কার মাটিতেও একটি জয় আছে। ২০১৩ সালে সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে পাল্লেকেলেতে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই জয়টিকে প্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন মাশরাফি। এখন বাংলাদেশ যেন জয় পায়, সেই আশাতেই আছে পুরোজাতি। সেই জয় পাওয়ার জন্য মাশরাফিবাহিনীও প্রস্তুত হচ্ছে। শনিবার ওয়ানডে মিশনে নামার আগে আজ একটি একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে।
×