ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৫ আইনজীবীর কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২২ মার্চ ২০১৭

 সাতক্ষীরায় সাবেক সভাপতি ও সাধারণ  সম্পাদকসহ ১৫  আইনজীবীর  কারাদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ বিচার চলার সময় সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের দরজা ও জানালা ভাংচুর মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৫ আইনজীবীর প্রত্যেককে আড়াই বছরের কারাদ-, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোঃ হাবিবুল্লাহ মাহমুদ মঙ্গলবার এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের এক ঘণ্টা পর রায়ের বিরুদ্ধে আপীল আবেদন জানালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জোয়ার্দ্দার মোঃ আমিনুল ইসলাম আপীল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্তদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। দ-াদেশপ্রাপ্ত আইনজীবীরা হলেনÑ সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. শাহ আলম, সাবেক সাধারণ সম্পদক এ্যাড. আব্দুস সাত্তার, এ্যাড. শেখ তোহা কামালউদ্দিন হীরা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন তোজাম, এ্যাড. আকবর আলী, এ্যাড. অসীম কুমার মণ্ডল (রথখোলা), এ্যাড. মোস্তফা আসাদুজ্জামান দিলু, এ্যাড. মিজানুর রহমান বাপ্পি, এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম, এ্যাড. আব্দুস সালাম, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, এ্যাড. মোঃ সোহরাব হোসেন, এ্যাড. আব্দুস সামাদ (৪), এ্যাড. আনিছুজ্জামান আনিছ, এ্যাড. সোহরাব হোসেন বাবলু। বেকসুর খালাস পাওয়া আইনজীবীরা হলেনÑ এ্যাড. সরদার সাঈফ ও এ্যাড. সাহেদুজ্জামান সায়েদ। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ নবেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম চলাকালীন বিচারককে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠিসোঠা নিয়ে ঘরের দরজা ও জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পেশকার, পিয়নসহ বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সভাপতি এ্যাড. শাহ আলম, তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুস সাত্তার, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. তোজাম্মেল হোসেন তোজামসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ওই আদালতের বিচারক মোঃ ফখরুদ্দিন বাদী হয়ে ওই দিন ১৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ আইন ২০০০-এর সংশোধনী ২০১২-এর ৪ ও ৫ ধারায় সদর থানায় মামলা (দ্রুতবিচার-২৬/১৩) দায়ের করেন। মামলায় সদর থানার উপ-পরিদর্শক এসএম হুমায়ুন কবীর এ্যাড. শাহ আলম, এ্যাড. আব্দুস সাত্তারসহ এজাহারভুক্ত ১৭ আইনজীবীর নামোল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আসামি ১৭ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলায় সাতজন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষী ও মামলার নথি পর্যালোচনা করে মঙ্গলবার সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক হাবিবুল্লাহ মাহমুদ এ রায় দেন। মঙ্গলবার রায় ঘোষণার পর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সংশিষ্ট আদালতে জামিন আবেদন জানালে তা খারিজ করে দেন বিচারক। একপর্যায়ে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপীল করে জামিন আবেদন জানালে বিচারক জোয়ার্দ্দার মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রতেক্যের ১০ হাজার টাকা বন্ডে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। সাতক্ষীরা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিপি এ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু ১৫ আইনজীবীর কারাদ- ও পরে তাদের জজকোর্ট থেকে জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
×