ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় ফের সক্রিয় চোরাকারবারি চক্র ॥ আসছে মাদক

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ১৭ মার্চ ২০১৭

নওগাঁয় ফের সক্রিয় চোরাকারবারি চক্র ॥ আসছে মাদক

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ ধামইরহাটে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা। এসব চোরাকারবারি স্থানীয় গডফাদাররা কৌশলে পাতানো ফাঁদের জালে আটকাচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের। দিনমজুর হিসেবে এসব মানুষকে সীমান্তে চোরাচালানিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। বিষয়গুলো নিয়ে বিজিবি, স্থানীয় প্রশাসন বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কোন ভূমিকা রাখছেন না। বরং তাদের ছত্রছায়াতেই চোরাচালানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। সম্প্রতি উপজেলার চকশব্দল গ্রামের তিন যুবক ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটক হওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। এদিকে দিনের পর দিন ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে ভারতীয় পণ্য অনুপ্রবেশ ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সীমান্ত গলিয়ে আসছে মাদকের বড়-বড় চালান। সপ্তাহখানেক আগে চোরাইপথে ভারত থেকে পণ্য আনতে গিয়ে ওই গ্রামের মৃত আত্তাবের ছেলে আবু সুফিয়ান, তোমেজের ছেলে শামসুল ও আজিজুলের ছেলে আব্দুল মতিনসহ আরও বেশ কয়েকজন যুবক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যায়। সেখানে গিয়ে তারা বিএসএফের হাতে ধরা পরে। গ্রামবাসী অভিযোগ করে জানান, বিএসএফের হাতে আটক ওই তিন যুবককে স্থানীয় চোরাকারবারি গডফাদার কিবরিয়ার ঋণের জালে আটকিয়ে বাধ্য করে চোরাচালানিতে। এ গ্রুপে মোমিন, কিবরিয়া ও রেজওয়ান নামে আরও তিন জনের নাম উঠে আসে। তারা সম্প্রতি সীমান্তে ভারতীয়দের দেয়া কাঁটাতারের বেড়া কেটে চোরাকারবারি কার্যক্রম সক্রিয় করে তুলেছে। তারা কৌশলে সাধারণ খেটে খাওয়া শ্রমিকদের দলে ভিড়িয়ে সীমান্ত পেরিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে আনছে নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন, ইয়াবা, হেরোইন ও ফেন্সিডিলসহ নানা নেশাজাতীয় দ্রব্য। এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করে বলেন, চোরকারবারিরা শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তাই তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। বরং উল্টো তারাই বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসন তাদের হাতে আছে এমন ভয় দেখিয়ে এলাকাবাসীকে চাপের মুখে রেখে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। চকশব্দল গ্রামের বিলকিছ বানু, পারুল, মহসীন জানান, গেল সপ্তাহে বিএসএফের হাতে তিন যুবক আটক হওয়ার পর বিষয়টি গ্রামবাসী তাৎক্ষণিকভাবে বিজিবির স্থানীয় দ্বায়িত্বশীলদের জানান। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা গ্রামে গিয়ে অভিযান চালায়। এসময় মোমিনের বাড়ি থেকে তারা কাঁটাতারের বেড়া কাটার অত্যাধুনিক কাঁচি, রামদা ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এসময় চোরাকারবারি কিবরিয়াকে বিজিবি আটক করলেও পরে রহস্যজনক কারণে তাকে ছেড়ে দেয়। তার কিংবা মোমিনের বিরুদ্ধে বিজিবি কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। এ বিষয়ে বিজিবি পতœীতলা ১৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আশরাফুজ্জামান জানান, সীমান্তে বিজিবি সক্রিয় আছে। যে কোন মূল্যে সীমান্তের চোরাকারবারিদের দমন করা হবে।
×