ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এটিএম কার্ড জালিয়াতি চক্রের ১১ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:০১, ১৬ মার্চ ২০১৭

এটিএম কার্ড জালিয়াতি চক্রের ১১ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে র‌্যাবের অভিযানে আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ১১ জন গ্রেফতার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে এটিএম কার্ড ও কার্ড তৈরির প্রচুর সরঞ্জাম। গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার এটিএম কার্ড জালিয়াতি চক্রের সদস্য। চক্রের সদস্যদের সঙ্গে বড় বড় শপিংমলের কিছু ব্যবসায়ী জড়িত। ওইসব ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠানে কার্ড পাঞ্চ করার মেশিন বসানো থাকে। সেই মেশিনেই জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটায় চক্রটি। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট হারে টাকা পেয়ে থাকে। গত পাঁচ বছরে চক্রটি এভাবে প্রায় ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত গত ১০ মার্চ রাজধানীর পান্থপথের বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের আইটি ফেয়ার ডট কম নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ এটিএম কার্ড জালিয়াত চক্র এটিএম কার্ড জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তদন্ত শুরু হয়। গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় র‌্যাব-১০ এর প্রযুক্তি বিষয়ে পারদর্শী একটি দল। অভিযানে গ্রেফতার হয় জালিয়াত চক্রের সক্রিয় সদস্য মোঃ জালাল হোসেন সুমন (২৭), মোঃ শাহ্ আজিজ সোহেল (৩৬), নূরে আলম (৪৫), মোঃ রানা (২৪), মোঃ জহিরুল ইসলাম (৩৭), মোঃ লুৎফর রহমান সুজন (৪২), পারভেজ (২৩), মোঃ ওয়াহেদ (২০), আবদুল আলী (৪০), মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) ও মোঃ কামরুজ্জামান সুমন (৩০)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আইটি এক্সপার্ট মোঃ শাহ্ আজিজ সোহেল (৩৬)। গ্রেফতারকৃদের কাছ থেকে কার্ড তৈরির বিশেষ ধরনের প্রিন্টার, বিভিন্ন ব্যাংকের দুশো এটিএম (ডেভিড ও ক্রেডিট) কার্ড, একহাজার তৈরিকৃত ফাঁকা এটিএম কার্ড (গোপন পিন নম্বর বসানো হয়নি), বিভিন্ন ব্যাংকের ৬টি কার্ড পাঞ্চ করার মেশিন উদ্ধার হয়েছে। র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানান, সোহেল দীর্ঘদিন দুবাইতে কর্মরত ছিল। দুবাই থাকাকালে তার সঙ্গে এরিন লিমো নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের পরিচয় হয়। সেই বিদেশির কাছ থেকে সোহেল আন্তর্জাতিক কার্ড জালিয়াতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়। এরিক লিমো গত ১০ বছর ধরে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। দুবাইতে ৫ বছর সোহেল এরিক লিমোর সঙ্গে কার্ড জালিয়াতিতে জড়িত ছিল। দেশে ফিরে আবার সে বিদেশী প্রতারক চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলে। বাংলাদেশে বিদেশীদের এটিএম কার্ড পাওয়া সহজ। চক্রটি বিদেশীদের সঙ্গে যোগসূত্র করে কার্ড জালিয়াতি শুরু করে। প্রযুক্তি কাজে সোহেল তার সহযোগী হিসেবে রানার সহায়তা নিত। রানাকে নিয়ে সোহেল প্রতারণার কাজটি করে আসছিল। গত প্রায় ৫ বছর ধরে কার্ড জালিয়াতির কাজে সক্রিয়ভাবে গ্রেফতারকৃতরা জড়িত। চক্রের সদস্যদের মধ্যে মাসুদ, বাবুল, সামী, মোশাররফ, কামরান আলম, সুমন ও বিদেশী সহযোগী পিটার গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে গ্রেফতার হয়। চক্রটি এ পর্যন্ত অন্তত ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর আরও জানান, চক্রটির সঙ্গে আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী আন্তর্জাতিক কার্ড জালিয়াতি চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। চক্রের বিদেশী সদস্যরা বিদেশীদের আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড হ্যাক করে। এরপর সেসব কার্ড নম্বর বাংলাদেশে অবস্থানকারী গ্রেফতারকৃতদের কাছে পাঠিয়ে দিত।
×