ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি ফের অনিশ্চিত

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৬ মার্চ ২০১৭

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি ফের অনিশ্চিত

ফিরোজ মান্না ॥ মালয়েশিয়ায় আবার জনশক্তি রফতানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জনশক্তি রফতানিকারকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সরকারী-বেসরকারী যৌথ ব্যবস্থাপনা (জিটুজি প্লাস) পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে এই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। জনশক্তি রফতানিকারক সাত প্রতিষ্ঠান দেশে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রিট করার পর আদালত মালয়েশিয়ায় প্ল্যানটেশন সেক্টরে ৫ হাজার কর্মী নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালত একই সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিএমইটির মহাপরিচালককে ১০ জনশক্তি রফতানিকারকের লাইসেন্সের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেন। অন্যদিকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ায় প্ল্যানটেনশন সেক্টরে কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফেল্ডা গ্লোবাল ভেঞ্চার (এফজিভি) মালয়েশিয়াস্ট বাংলাদেশ হাইকমিশনে চিঠি দিয়ে কর্মী নিয়োগ আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছে। সূত্র জানিয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের (কেডিএন) চাহিদাপত্রের প্রেক্ষিতে পাঁচটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে ৫ হাজার ২৪০ কর্র্মী নিয়োগের অনুমোদন দেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। ১৩ দিনের মাথায় এফজিভির প্রেসিডেন্ট দাতো জাকারিয়া আশরাফ চিঠিতে জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাতটি জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় যে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলো এফজিভির স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান না। ফলে বহুল আলোচিত জিটুটি প্লাস পদ্ধতিতে শুরু হওয়া কর্মী নিয়োগ আবার হুমকির মধ্যে পড়েছে। এদিকে, মালয়েশিয়ার বৃহত্তম কোম্পানি ফেল্ডা ৫ হাজার কর্মী নিয়োগের কার্যাদেশ পাওয়া বাংলাদেশের সাত জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান কর্মী নিয়োগ করতে না পেরে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের বেঞ্চে ২৭ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদন করে। আদালত রিট আবেদনে ৫ হাজার কর্মী নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। একই সঙ্গে ফেল্ডার মনোনীত ৭টি রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যতিত অন্য কোন এজেন্সি কর্মী নিয়োগ করতে পারবে না মর্মে আদেশ দেন। আদালত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিএমইটি মহাপরিচালককে ৪ সপ্তাহের মধ্যে ১০ জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জিটুজি প্লাসের মাধ্যমে প্ল্যান্টেশনে ৫ হাজার এবং ফ্যাক্টরির কাজের জন্য পাঁচ এজেন্সির মাধ্যমে ২৪০ কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠায় কেডিএন। এজেন্সিগুলো হলোÑ আমিন ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস, ইউনিক ইস্টার্ন লিমিটেড, আল ইসলাম ওভারসিস, প্রান্তিক ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল। পরবর্তীতে আরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পাবে বলে জানা গেছে। বায়রার মহাসচিব ও ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন স্বপন এর আগে অবশ্য বলেছেন, এফজিভির কারণে অনলাইনে কর্মী নিয়োগে কোন প্রভাব পড়বে না। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে মালয়েশিয়া ৭ থেকে ৮শ’ কর্মী নিয়োগ হবে। তাছাড়া কোর্টে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাতেও কর্মী নিয়োগে প্রভাব ফেলবে না। একটি সেক্টরে সাময়িক অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। বাকি সেক্টরগুলোতে কর্মী নিয়োগ চলবে। একই রকমের কথা বললেন, প্রান্তিক ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তাফা। প্ল্যান্টেশন সেক্টর নিয়ে কোর্টে একটা রিট হয়েছে। সেখানে জনশক্তি রফতানিকারক ১০ প্রতিষ্ঠানসহ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বিএমইটির ডিজিসহ ১৬ জনকে নোটিস করেছে। যেহেতু কোর্টে একটি রিট হয়েছে তার জবাব আমরা দেব। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেয়া হবে।
×