তত্ত্বাবধায়ক-শিশু বান্ধব পাঠশালা, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা।
০১৭৪০-৬২৭৬৫২
সুপ্রিয় শিক্ষার্থী, আজ তোমাদের পাঠ্য বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের কবিতা ‘ফেব্রুয়ারির গান’ নিয়ে আলোচনা করব। আশাকরি কবিতাটি কবির নামসহ মুখস্থ করেছ এবং কোথায় কোন বিরাম চিহ্ন আছে তাও হয়তো রপ্ত করেছ । তো প্রথমেই কিছু লাইন এলোমেলো করে দেওয়া হলো তোমরা সাজিয়ে নাও।
১.নদী হচ্ছে ¯্রােতস্বিনী
মন ভোলানো সুর
সাগর নদীর ঊর্মিমালার
সাগর সমুদ্দুর।
২. মায়ের মুখের মধুর ভাষায়
ঝরনা সাগর নই
ফুল পাখি নই, নইকো পাহাড়
মনের কথা কই।
এবার লেখ :
ক. লাইনগুলো কোন কবিতার ? খ. কবির নাম কী ? গ. সংক্ষেপে কবিতাটির মূল ভাব।
এবার দেখি শব্দার্থ :
মুগ্ধ Ñ বিমোহিত, আনন্দিত।
ঊর্মি Ñ নদী ও সাগরের ঢেউ।
ঊর্মিমালা Ñ ঢেউসমূহ, ঢেউগুলো।
¯্রােতস্বিনী Ñ নদী।
সমুদ্দুর Ñ সমুদ্র, সাগর।
বাহার Ñ সৌন্দর্য।
বর্ণলতা Ñ সোনালি রঙের বুনো লতা।
এবার কয়টি যুক্তবর্ণ খুঁজে ভেঙ্গে তা দিয়ে শব্দ ও বাক্য লেখি :
যুক্তবর্ণ Ñ শব্দ বাক্য
গ্ধ গ্ + ধ মুগ্ধ তার গান আমাকে মুগ্ধ করেছে।
দ্দ দ্ + দ সমুদ্দুর সাত সমুদ্দুর পারে ছিল রূপকথার রাজ্য। (দ্দÑ যুগ্মবর্ণ)
স্ব স্ + ব স্বর্ণলতা স্বর্ণলতা সত্যই সু›্দর।
ন্দ ন্ + দ সুন্দর এসো সুন্দরের কথা বলি।
ধ্ব ধ্ + ব ধ্বংস অহংকার ধ্বংসের কারণ।
এবার একুশে ফেব্রুয়ারি সম্বন্ধে রচনা লিখি :
(পরীক্ষায় ২০০ শব্দের মধ্যে লিখতে বলবে ও সংকেত দেওয়া থাকবে)
একুশে ফেব্রয়ারি/ ফেব্রুয়ারির গান/ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
সূচনা : ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম’ প্রত্যেক জাতি বা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে মাতৃভাষা অতিব আপন একটি ভাষা। বাংলা আমাদের মাতৃভাষা। এই মায়ের ভাষাকে রক্ষা করতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে এ জাতি। তাইতো ২১ ফেব্রুয়ারি এ জাতির চেতনার দিন, নবজাগরণের দিন।
রাষ্ট্রভাষার আন্দোলন : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হলে শাসক চক্র বাঙালি জাতিকে দুর্বল করতে তাদের মায়ের ভাষার উপর চক্রান্ত শুরু করে। এর প্রতিবাদে ১৯৫২ সালের শুরুতে মায়ের ভাষা রক্ষার আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। আন্দোলন ঠেকানোর জন্য সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ প্রাণের দাবীতে ২১ ফেব্রায়ারি ছাত্র যুব সমাজ ১৪৪ ধারা জারি ভঙ্গ করে রাজপথে মিছিল করে। এ মিছিলে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার সহ নাম না জানা অনেকে শহিদ হন। তাইতো হৃদয়ে ধ্বনিত হয়Ñ
আমার ভা’য়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি...
রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি : বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে দেশবাসী প্রচন্ড বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। উপায়ন্তর না দেখে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
শহীদ দিবস : প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস : ভাষার জন্য জীবন দান এ বিরল আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এখন প্রতিবছর এই দিনটি বিশ্বের ১৮৮টি দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
স্বাধীনতার চেতনা : ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালির মাঝে নবচেতনার জন্ম হয়। তা হচ্ছে স্বাধীকারের স্বপ্ন। এর পথ ধরেই আসে বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীন বাংলাদেশ।
মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস মাতৃভাষার উন্নয়ন ও বিস্তারে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়িয়ে দেয়।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চেতনায় : বাংলা ভাষা ও তার সাহিত্য এবং সংস্কৃতি একুশের চেতনার মধ্য দিয়ে বিকশিত হতে থাকে। আজও তা অব্যাহত রয়েছে নব নব রূপে।
উপসংহার : ২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের অহংকার। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। এই ২১ শে আমাদের স্বাধীনতার মূল মন্ত্র এবং আমাদের জাতীয় জীবনে চলার অনুপ্রেরণা।