ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেহাল বেসামাল

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বেহাল বেসামাল

ষোল কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। আর এই বেড়ে চলা দেশের আয়তনের সাপেক্ষে বেমানান। ফলশ্রুতিতে অপরিকল্পিত ও সুবিধাভোগী বাংলাদেশ। এই দেশ কৃষি প্রধান হওয়া সত্ত্বেও কৃষক উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। যার ফলে কৃষক কর্মসংস্থানের খোঁজ শহরমুখী হচ্ছে। শহরমুখী হচ্ছে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। সরকারী মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ব্যক্তিমালিকানাধীন সকল প্রতিষ্ঠান শহরকেন্দ্রিক। একদিকে শহরের বৈচিত্র্যময় জীবন অন্যদিকে যান্ত্রিক জীবনের হাতছানি। রাজপথ দেশের অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম। যার সদ্ব্যবহারের অধিকার পথচারী থেকে চলন্ত যানবাহন পর্যন্ত। কিন্তু শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণী হকার ফুটপাথে ভিড় জমাচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাজপথকে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। রাজপথের এই বেহাল দশার একটা মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার হতে পারে ‘শ্রেণীবৈষম্য’। উঁচু শ্রেণীর জীবনমান নিচু শ্রেণীকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। ফলে নিচু শ্রেণী অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগতে থাকে এবং তারা সঙ্কট উত্তরণের জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করে এবং তারা ব্যবসার বদলতে রাজপথকে ব্যবহার করে। কর্তৃপক্ষ তাদের উচ্ছেদ করতে চাইলেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের জন্য সম্ভব হয় না। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ‘নগর পরিস্থিতি ২০১৬ : ঢাকা মহানগরের যানজট-শাসন-ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিত’ নামের এক গবেষণায় বলা হয়, ঢাকার ফুটপাথে প্রায় আড়াই লাখ হকার ৪৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে। তাঁদের কাছ থেকে বছরে ১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। সাধারণ জনগণ যখন উঁচু বা ক্ষমতাসীন শ্রেণীর শোষণ দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে তখন তারাও ট্রাফিক আইন ভাঙতেও দ্বিধা করে না। তারা দ্বিধা করে না রাস্তাকে ‘প্রকাশ্য শৌচাগার বানাতে। সর্বোপরি এই দেশের রাজপথকে মুক্ত করতে হলে নিজস্ব পরিকল্পনা চাই। চাই ব্যক্তিগত গাড়ির বদলে সাইকেল অথবা যাত্রীবাহী গাড়ি। মন্ত্রণালয়গুলোকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। মোটকথা দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন আসলেই রাজপথসহ সব সেক্টরে পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ থেকে
×