ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতেও দালাল

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

টাঙ্গাইলে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতেও দালাল

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের সরকারী তালিকাভুক্ত করতে বর্তমান সরকারের সময়ে শুরু হয়েছে ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতি। যাতে করে বিদেশে কর্মীরা নানা সুবিধা প্রাপ্তির পাশাপাশি নিজেদের নানা বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা পেতে পারে। প্রথম দিকে কর্মসূচীটি রাজধানীকেন্দ্রিক থাকলেও বিদেশে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে উদ্যোগী ভূমিকা নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় জেলা পর্যায়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট কার্যক্রম। অবৈধ ও অনিয়মিত অভিবাসন রোধকল্পে নানামুখী উদ্যোগের অন্যতম অংশ হিসেবে জেলা পর্যায়ে সরকারের এই জনগুরুত্বপূর্ণ কাজটি বাস্তবায়ন করছে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস। টাঙ্গাইলে একই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ প্রবাসী হলেও পাশাপাশি নতুন কর্মী হিসেবেও যাচ্ছে অনেকে। এদের আগে রাজধানীতে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট করতে হতো। এতে দুর্ভোগ ছাড়াও নানা ঝুটঝামেলা পোহাতে হয়েছে তাদের। কিন্তু এই দুর্ভোগ ও ঝামেলা কমিয়ে সহজভাবে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতেই সম্প্রতি টাঙ্গাইল জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে বুয়েটের সহযোগিতায় ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। তালতলায় অবস্থিত জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে শুরু থেকেই চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন আশার পরপরই বিদেশে যেতে আগ্রহী কর্মীদের আনাগোনা বাড়তে থাকায় অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দালালদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আর এই সিন্ডিকেটের দালালদের সহযোগিতা দেয়ার অভিযোগ প্রধান সহকারী পরিচালক কার্তিক চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানের ভেতর এবং বাইরে দালালদের বেপরোয়া দাপটে চলছে প্রতিষ্ঠানটিতে। আর প্রতিষ্ঠানের সহকারী পরিচালকের পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার কাজে নিয়োজিত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আমেনা আক্তারের নামেও রয়েছে দালালদের সহযোগিতার নানা অভিযোগ। ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসা বিদেশ গমনেচ্ছুরা দালালদের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ায় তাদের কাজ সহজ হয়ে যায়। অপরদিকে সাধারণভাবে সেবা নিশ্চিত করতে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। নাগরপুর উপজেলার ফুলতারা গ্রামের জলিল মিয়া জানান, আমি গত ২৬ জানুয়ারি কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু সেই দিন নিয়মানুযায়ী আমাকে ফিঙ্গার প্রিন্ট না নিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি আসার জন্য বলে। আবার আমি যখন ২ ফেব্রুয়ারি আসি, সেই দিনও আমাকে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেয়ার সুযোগ করে দেয়নি। আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট হবে কিনা বলতে পারছি না। একই ধরনের অভিযোগ করেছে সেবা নিতে আশা সবাই। তবে অনেকেই দালালদের ভয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। অনেকেই অভিযোগ করেছে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার নির্ধারিত সময়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট না দিয়ে সিরিয়াল না মেনে শুধু দালাল চক্রের সদস্যদের দেয়া টোকেনই ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়া হচ্ছে।
×