ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইলে সম্পর্ক ॥ ছাত্রীর সর্বনাশ

প্রকাশিত: ০৪:১৩, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মোবাইলে সম্পর্ক ॥ ছাত্রীর সর্বনাশ

সংবাদদাতা, বদরগঞ্জ, রংপুর, ১২ ফেব্রুয়ারি ॥ বদরগঞ্জে মুঠোফোনে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে নির্যাতিতার পক্ষে বদরগঞ্জ থানায় মূলহোতাসহ অপর একজনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দেয়া হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের কালজানি এলাকায়। ছাত্রীটি একই এলাকার একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনার পর পালিয়ে গেছে মূলহোতা টুটুল মিয়া। রবিবার এলাকাবাসী ও থানায় লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন টুটুল মিয়া নামে এক যুবক। মেয়েটি হিন্দু পরিবারের হওয়ায় টুটুল কৌশলে নিজের নাম ও ঠিকানা গোপন করে নিজেকে আকাশ রায় পরিচয় দেন। বাড়ি দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বাংলাহিলীতে। এভাবে মোবাইল ফোনে প্রথমে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন টুটুল মিয়া। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এতে প্রায় ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে মেয়েটি। এর মধ্যে মেয়েটি বিয়ের চাপ সৃষ্টি করলে আকাশ রায় পরিচয়দানকারী টুটুল মিয়া টালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে ঘটনা এলাকায় ফাঁস হয়ে পড়লে টুটুল নিজেকে ধর্মান্তরিত হয়ে এফিডেফিট করে মেয়েটিকে বিয়ে করার কৌশল অবলম্বন করে। পরে মেয়ের পরিবার জানতে পারে আসলে আকাশ রায় আর কেউ নন। সে একই ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার আব্দুল মোতালেব মিয়ার ছেলে টুটুল মিয়া। তার সহযোগী মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে হেমন্ত ওরফে হেম বাবু। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি টুটুল মিয়া তার বন্ধু হেমন্তর সঙ্গে আতাত করে রোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের কথা বলে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। ওইদিন তাকে বোরকা পরিয়ে মোটরসাইকেল যোগে রংপুরের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায় মেয়েটি প্রায় ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ সময় চিকিৎসদের সঙ্গে পরামর্শ করে জোর করে মেয়েটির গর্ভপাত ঘটানো হয়। রংপুরের ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র নিয়ে মেয়েটিকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় একই ইউনিয়নের কাশিগঞ্জ এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে টুটুল সেখান থেকে সটকে পড়েন। সেখানে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে মেয়েটিকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে মেয়ের পিসি (ফুপু) বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে আব্দুল মোতালেব মিয়ার ছেলে টুটুল মিয়া (২২) ও হেমন্ত ওরফে হেম বাবুকে (৩৪) আসামি করে বদরগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলাটি এখনও এজাহার হিসেবে গণ্য (রেকর্ড) করা হয়নি। বাবা আব্দুল মোতালেব বলেন, আমার ছেলেকে মিথ্যা ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে। মধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নাল হক বলেন, ঘটনাটি বিস্তারিত অবগত হওয়ার পর মেয়েটির পরিবারকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
×