ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জাপুরে চলছে বউমরা নদীর মাটি লুটের মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৭

  মির্জাপুরে চলছে বউমরা নদীর মাটি লুটের মহোৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ২৯ জানুয়ারি ॥ ফতেপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই নদী (স্থানীয় নাম বউমরা) ও নদীর পাড় থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার ও এক্সকাভেটর দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু লুট করা হচ্ছে। ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া থেকে ফতেপুর বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকার কয়েকটি স্থানে এ মাটি লুট চলছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই মাটি লুটের মহোৎসব চললেও স্থানীয় প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। বালি লুটের কারণে ভিটে-মাটি হারাচ্ছে ঝিনাই নদীর (বউমরা) তীরবর্তী লোকজন নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ফসলী জমি। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালি লুট হলেও সরকার পাচ্ছে না কোন রাজস্ব। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ঝিনাই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু লুট শুরু হয়। কিন্তু বর্ষা চলে যাওয়ার চার মাস পরও ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ হয়নি। নদী থেকে বালু তোলার পাশাপাশি শুরু হয়েছে নদীর পাড় কেটে মাটি লুটের মহোৎসব। কিন্তু মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে ওই এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছে। রবিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, মটি লুটের দৃশ্য। থলপাড়া মধ্যপাড়া এলাকায় নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে ট্রাকযোগে অন্যত্র নেয়া হচ্ছে। বৈলানপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি ড্রেজার দিয়ে একযোগে নদী থেকে বালু তুলে নদীর পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার ফলে কুর্ণী-ফতেপুর সড়ক রক্ষাকারী বাঁধের প্রায় ১৫০ ফুট জায়গা ভেঙ্গে গেছে। পাশেই হিলরা বাজারের অধিকাংশ জায়গা ভেঙ্গে বাজারও বিলীন হওয়ার পথে। এছাড়া বৈলানপুর গ্রামের সেলিম খানের সম্বল সাড়ে ১২ শতক ভিটে-মাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমিনুর মিয়ার পাকা এক তলা ভবনসহ দুই একর জমি, জলিলের ১৫ শতাংশ, পরেশ, নরেশ ও রমেশের ৫৬ শতাংশ জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। দরিদ্র কৃষক সেলিম মিয়া ভিটেমাটি হারিয়ে এখন নিঃস্ব। তিনি বলেন, আমার এই বাড়িটিই ছিল শেষ সম্বল। এখন আমি ঘরবাড়ি হারিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছি।
×