ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭

দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অনিয়ম

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় পরিচালিত জীবিকায়নের জন্য মহিলাদের দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিন মাস মেয়াদী ওই প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে। ভাতা থেকে বাসা ভাড়ার জন্য একটি অংশ কেটে রাখারও অভিযোগ রয়েছে। ওই কর্মসূচীর আওতায় বাসাভাড়া নেয়া হলেও সেখানে এ সংক্রান্ত কোন সাইনবোর্ড নেই। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলার ১২টি সেন্টারে জীবিকায়নের জন্য মহিলাদের দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় আধুনিক দর্জি বিজ্ঞান, চট ও কাপড়ের ব্যাগ, এমব্রয়ডারি, হাঁস-মুরগি পালন ও বিউটিফিকেশন ট্রেডে দশজন করে ৫০ জনকে তিন মাস পরপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এজন্য প্রশিক্ষণার্থীদের দৈনিক ৬০ টাকা হারে ভাতা দেয়া হয়। জেলা মহিলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে সবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় চারটি ট্রেডের জন্য টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়ায় একটি বাসাভাড়া নেয়া হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার একটি অংশ দিয়ে সে বাসাভাড়া পরিশোধ করা হয় বলে জানা যায়। সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গেটের সামনে ওই কর্মসূচীর কোন সাইনবোর্ড নেই। তবে সেখানে একজনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা ‘সুচি শিল্প’ নামের একটি সাইনবোর্ড রয়েছে। সূচি শিল্পের নির্বাহী পরিচালক ও প্রশিক্ষণ কর্মসুচির প্রশিক্ষক মারজানারা মেরী বলেন, ‘আমার বাসার একটি কক্ষ মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রশিক্ষণ কক্ষ হিসেবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভাড়া দিয়েছি। তারপর থেকে সেখানে আমার শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। সুচি শিল্পে হাতে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর ওপর নারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। তিন মাস মেয়াদী প্রশক্ষণের সদ্য সমাপ্ত ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীরা জানায়, বিগত বছরে প্রশিক্ষণার্থীরা বন্ধের দিনের ভাতাও পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি কোন প্রশিক্ষণার্থী অনুপস্থিত থাকলে সেদিনের ভাতাও কাটা হয়। বন্ধের ভাতা আবার চালু করা নিয়ে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। উপরন্তু তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীও এটা আর চালু করতে পারবেন না। এ ব্যাপারে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা জানান, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য আগে প্রতিদিন ২০ টাকা ভাতা ছিল। তখন ছুটির দিনেও এ ভাতা দেয়া হতো। এখন ভাতা ৬০ টাকা করা হয়েছে। এজন্য ছুটির দিনের ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটি সরকারী সিদ্ধান্ত। প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর জন্য বাসাভাড়া বাবদ কোন ভাতা কাটা হয় না। এটা অন্যভাবে সংগ্রহ করা হয়। অন্য অভিযোগগুলোও মিথ্যা দাবি করে নাসরিন সুলতানা আরও বলেন, ভাতার বিল তৈরির আগে মেয়েদের সুবিধার জন্য সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের অফিসে রাজনীতি আছে। নিজেদের ঘরে শত্রু রয়েছে। তারাই নানা অভিযোগ তুলছে।’ সাইনবোর্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অফিস পরিবর্তন করতে হবে। তাছাড়া প্রশিক্ষণের জন্য নতুন সাইনবোর্ড করতে হবে।
×