ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি

প্রকাশিত: ০৯:০২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৭

নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন কমিশন গঠনে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন’ আয়োজিত আলোচনায় সভায় তারা বলেন, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নতুন কমিশন গঠনের আগেই আইন প্রণয়ন জরুরী। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে কমিশন গঠন করা যেতে পারে। এছাড়া তারা ইসি নিয়োগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপের আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ আহ্বান জানান। বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। তবে এই নিয়োগ হতে হবে উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলীসাপেক্ষে। আইন প্রণয়ন না করে আবারও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হলে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতে এবং জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনও দলীয় সরকারের অধীনে হবে এ কারণে যথাযথ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি শক্তিশালী, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নিয়োগ করা জরুরী হয়ে পড়েছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেন, ‘কমিশনে থাকাবস্থায় আমরা যে আইনের খসড়াটি প্রণয়ন করেছিলাম সে সময়ে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ করে করেছিলাম। এ কারণে সব রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে সম্মত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা যে এরকম হয়ে যাবে আমরা বুঝতে পারিনি। দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল যে সংসদে থাকবে না তা আমরা ভাবিও নাই। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের স্টেক হোল্ডার সরকার এবং রাজনৈতিক দল। এছাড়াও নির্বাচনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। নির্বাচনের সময়ে নির্বাচন কমিশনই মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা পালন করে থাকে। কমিশনার নিয়োগ বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরী। বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে দীর্ঘদিন ধরে আইন প্রণয়নের কথা বলে আসছি। আশার কথা যে, রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ইস্যুতে আলাপ-আলোচনা করেছেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যতই সার্চ কমিটিকে নিরপেক্ষ করি না কেন, তারা যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে না পারে, তাহলে তা কোন সুফল বয়ে আনবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসনীয়’। তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে ইভিএম চালু করা ঠিক হবে না। কেননা ইভিএম অযোগ্য ও অদক্ষ লোকদের কাছে গেলে এর অপব্যবহার হতে পারে। সুজন সম্পাদক এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সংবিধানে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের বিষয়ে আইন প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ দেখছি না। অনুষ্ঠানের সুজনের পক্ষ থেকে লিখিত প্রবন্ধে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংবিধান রচনার ৪৬ বছর পরেও কমিশনার নিয়োগে আইন কোন সরকারই প্রণয়ন করেনি। যার ফলে আমাদের সংবিধান বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই সংবিধান নির্দেশিত এ আইনটি প্রণয়ন করা আজ জরুরী হয়ে পড়েছে।
×