ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্মসূচী পালনে বাধা দিয়েছে ॥ রিজভী

বিক্ষোভ কর্মসূচী দিয়েও মাঠে নামেনি বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৯ জানুয়ারি ২০১৭

বিক্ষোভ কর্মসূচী দিয়েও মাঠে নামেনি বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিক্ষোভ কর্মসূচী ডেকে মাঠে নামেনি বিএনপি। রাজধানীতে সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে শনিবার সকালে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রবিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তবে রবিবার রাজধানীর কোথাও এ কর্মসূচী পালন করতে দেখা যায়নি। অবশ্য ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন ঝটিকা মিছিল করার কথা শোনা গেছে। এদিকে রবিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনে বাধা দিয়েছে। উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যায়িত করে এ দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। কিন্তু এ দিনটিকে সরকারী দল গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করায় এবং খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়ার তারিখ থাকায় বিএনপি ৫ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল ও ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচীর ঘোষণা দেয়। কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না পাওয়ায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চায় দলটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সমাবেশ করার অনুমতি না পেয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে সারাদেশের সব জেলা ও মহানগর সদরে এবং রাজধানীর থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিল বিএনপি। ওই কর্মসূচীতে নাশকতায় দেড়শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে টানা ৯২ দিন কর্মসূচী পালন শেষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয় থেকে বের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে বাসায় ফিরে যান। বিএনপির বিক্ষোভ পালনে বাধা দিয়েছে –রিজভী ॥ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো হামলা চালিয়ে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনে বাধা প্রদান করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রবিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি বিএনপি ঘোষিত ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন উপলক্ষে দেশব্যাপী সরকারী বাহিনী ও শাসকদলের ক্যাডারদের হামলায় বিএনপির কর্মসূচী পালনে অগণতান্ত্রিকভাবে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে এবং শনিবার ঢাকা মহানগরে সমাবেশ করতে না দেয়ার প্রতিবাদে রবিবার দেশব্যাপী জেলা সদর ও মহানগর সদরে এবং ঢাকা মহানগরের থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু রবিবার ঘোষিত এ কর্মসূচী পালন করতে গেলে দেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হামলা চালিয়ে বাধা প্রদান করে। রিজভী বলেন, বিএনপি যাতে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করতে না পারে সে জন্য রবিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয় এবং বেশকিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। এমনকি নেতাকর্মীদের না পেয়ে পুলিশ বাড়ির মহিলা ও শিশুদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে। বর্তমান সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এমনভাবে নিজেদের লোক দিয়ে তৈরি করেছে যারা অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, হামলা, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যায় আগ্রহী। যে কারণে পুলিশ অন্যায়ভাবে বিএনপির কর্মসূচীকে বাধাগ্রস্ত করলেও তাদের জবাবদিহি করতে হয় না, বরং তাদের প্রমোশন ও গুরুত্বপূর্ণ পোস্টিং দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। রিজভী অভিযোগ করেন, শাহ আলী থানা বিএনপি বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে বিসিআইসি স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে বিএনপিকর্মী সাজ্জাদুল হাসান, মোঃ সুমন ও ক্ষিতিশ চন্দ্র দাসসহ ৫ নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির মিছিলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে ৭ নেতাকর্মীকে আহত করে। বিক্ষোভ কর্মসূচীকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি বায়েজীদ পান্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ আলম সারোয়ারকে পুলিশ শনিবার রাতে গ্রেফতার করে। আমরা গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। রিজভী বলেন, বিএনপির কর্মসূচীর কথা শুনলেই ক্ষমতাসীনদের মসনদ কেঁপে ওঠে। কারণ জনগণই তাদের মূল আতঙ্ক। জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে জনগণকে তাদের এত ভয়। বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার এবং সভা-সমাবেশের ওপর হামলা ও বাধা দেয়ার ঘটনায় তারা জনগণের কাছে ক্রমাগত নিন্দিত ও ধিকৃত হচ্ছে। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ। লাখ লাখ পায়ের আওয়াজে কেঁপে কেঁপে উঠছে স্বৈরাচারের মাটি। দুরন্ত দুর্নিবার আন্দোলনের শক্তি টের পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ভয়ে আবোল-তাবোল বকছে। আর তাই বিএনপির কর্মসূচীতে পুলিশ লেলিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এভাবে তারা নিস্তার পাবে না।
×