ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচী

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৮ জানুয়ারি ২০১৭

আজ বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমাবেশ করার অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে আজ রবিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। শনিবার সকালে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, প্রতিটি জেলা ও মহানগর সদর এবং রাজধানীর প্রতিটি থানায় থানায় এ কর্মসূচী পালন করা হবে। বিক্ষোভ কর্মসূচী বলতে বিক্ষোভ মিছিল অথবা বিক্ষোভ সমাবেশ যে যেভাবে করতে চায় তাই করতে পারবে। উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে বেশ ক’দিন আগেই ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যায়িত করে এ দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। কিন্তু এ দিনটিকে সরকারী দল গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করায় এবং খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়ার তারিখ থাকায় বিএনপি ৫ জানুয়ারি সারাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কালো পতাকা মিছিল ও ৭ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়। কিন্তু বার বার চেষ্টা করেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি না পাওয়ায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চায় দলটি। কিন্তু শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সেখানেও সমাবেশ করার অনুমতি না পেয়ে সকাল পৌনে ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করতে না পেরে লাগাতার অবরোধ ডেকেছিল বিএনপি। ওই কর্মসূচীতে নাশকতায় দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে টানা ৯২ দিন কর্মসূচী পালন শেষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয় থেকে বের হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে বাসায় ফিরে যান। এদিকে সমাবেশ করতে না পারায় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খলা করতে পারে এমন আশঙ্কা থাকায় দলের নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই পুলিশী প্রহরা জোরদার করা হয়। পোশাকধারীদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সতর্ক প্রহরায় ছিলেন। এছাড়া বিএনপি কার্যালয়ের কাছে জলকামান, সাজোয়াযান ও প্রিজন ভ্যানসহ পুলিশের কয়েকটি গাড়ি রাখা ছিল। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে ৭ জানুয়ারির সমাবেশ কর্মসূচীতে সরকারের বাধা দেয়ার নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। ২৮ ডিসেম্বর সমাবেশের ঘোষণা দেয়ার পর পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদফতরের কাছে চিঠি দেয়া হলেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়ায় আবারও প্রমাণিত হলো, সরকার গণতন্ত্রের সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতার গলায় ফাঁসির দড়ি লটকিয়ে দিয়েছে। নিঃশব্দ বোবাকণ্ঠই আওয়ামী বাকশালীদের কাছে প্রিয়। এ সরকারের আমলে বিরোধী দল বিশেষ করে নারীদের উপর নির্যাতনের মাত্রা অতীতের যে কোন সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। রিজভী অভিযোগ করেন, ৫ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। বরিশালে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা চালিয়ে মহিলা কাউন্সিলরসহ মহিলা দলের অর্ধশত নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে মারাত্মক আহত করেছে। এতে স্থানীয় বিএনপি নেত্রী আফরোজা খানম আহত হন। সরকার ভিন্নমত সহ্য করতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যই অনাচারের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। আর এই পথ বেছে নেয়ার জন্যই অপরাধীরা আশকারা পাচ্ছে। রিজভী বলেন, ‘বিএনপি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চাইছে’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তাদের বেলায়ই প্রযোজ্য। কারণ, বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে আছে। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। আর র‌্যাব-পুলিশ ও অদৃশ্য শক্তি তাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। বিএনপি কিভাবে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চাইছে তা আওয়ামী লীগকে প্রমাণ দিতে হবে। আর প্রমাণ দিতে না পারলে এ ধরনের কথা থেকে বিরত থাকতে হবে। বহিষ্কৃত দুই মেয়রকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন ফখরুল ॥ গাজীপুর ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বহিষ্কৃত মেয়র আব্দুল মান্নান ও আরিফুল হক চৌধুরীকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইউনাইডেট হাসপাতালে গিয়ে তিনি তাদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন। উল্লেখ্য, গত বছর ১৯ আগস্ট গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশীটভুক্ত আসামি হওয়ায় গত বছর ৭ জানুয়ারি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
×