ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষসেরা কোচে অনাগ্রহ জিদানের

গার্ডিওলার অবসর ভাবনা!

প্রকাশিত: ০৩:৫৬, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

গার্ডিওলার অবসর  ভাবনা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বয়স মাত্র ৪৫ বছর। কোচিং ক্যারিয়ারের বয়স হয়নি এখনও ১০ বছর। অথচ সময়ের অন্যতম সেরা কোচ পেপ গার্ডিওলার চিন্তায় চলে এসেছে অবসর ভাবনা। এক সাক্ষাতকারে ম্যানচেস্টার সিটির তারকা কোচ জানিয়েছেন, তিনি কোচিং ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়ে পা দিয়েছেন। এদিকে আরেক সাক্ষাতকারে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান বলেছেন, ফিফার বর্ষসেরা কোচ হওয়া নিয়ে তার আগ্রহ নেই। বিদায়ের বার্তা দিয়ে গার্ডিওলা বলেন, ম্যানচেস্টার সিটিতে হয়তো তিন বছর বা এর কিছু বেশি সময় থাকব। তবে আমি কোচ হিসেবে ক্যারিয়ারের শেষের দিকে এগোচ্ছি। এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। এখন পর্যন্ত কোন ক্লাবে তিন বা চার বছরের বেশি থাকেননি গার্ডিওলা। স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সিলোনায় চার বছর, আর জার্মান শক্তি বেয়ার্ন মিউনিখে তিন বছর। এর চেয়ে বেশি সময় একটা ক্লাবে চাইলে তিনি থাকতেই পারেন। বার্সাতেই তিনি থেকে যেতে পারতেন আরও লম্বা সময়। কিন্তু তার ভাবনাটা অন্যরকম। এক জায়গায় থিতু হয়ে থাকলে আবেদনটা কমে যেতে পারে। ক্লাব ফুটবলে সফল এই কোচ কখনও জাতীয় দলের কোচ হয়ে কাজ করেননি। এ কারণে অনেকেই ভাবতে পারে ক্লাব ফুটবলে ইতি টেনে হয়ত তিনি জাতীয় দলে যোগ দিবেন। কিন্তু এমন সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন সাবেক বার্সা বস। গার্ডিওলা ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, যখন কোন ম্যাচ জিতি, অবশ্যই তখন অনেক ভাল লাগে। হাতে এক গ্লাস ওয়াইন নিয়ে আমি সেটা উপভোগও করি। কিন্তু তখন এই ভাবনাটাও আসে, এর পরের ধাপটাতে আরও ভাল কিছু করা যায় কী না? যদি মনে হয় সম্ভব না, তাহলে আমি আর থাকব না। সেই মুহূর্তেই আমার মনে হবে যে আমি ক্যারিয়ারের শেষ দিকে চলে এসেছি। সত্যি বলতে, সেই ভাবনাটা শুরুও হয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে আমার ক্যারিয়ারের শেষের শুরু হয়ে গেছে। ৬০-৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমি কোচিং করাব না। প্রিমিয়ার লীগে বার্নলির বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষেও তিনি বলেন, সিটি সম্ভবত আমার শেষ ক্লাব। অথচ মাত্র আট বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে অনেক সাফল্য পেয়েছেন গার্ডিওলা। ২১টি শিরোপা জিতেছেন। বার্সিলোনার স্বর্ণযুগের সারথী তিনি। বেয়ার্ন মিউনিখেও একই সাফল্য। এখন সিটিতে নতুন চ্যালেঞ্জ, ক্লাবটিকে ইতিহাসের অংশ করানো। তবে এত এত চ্যালেঞ্জ সম্ভবত গার্ডিওলাকে ক্লান্ত করে তুলছে। কাজটা যে কঠিন তা প্রমাণও হচ্ছে। এ কারণেই হয়ত হাঁপিয়ে ওঠা গার্ডিওলা শেষের চিন্তা শুরু করে দিয়েছেন। ২০১৬ সালের ফিফা বর্ষসেরা কোচের পুরস্কার জিততে আশাবাদী নন রিয়াল মাদ্রিদ বস জিনেদিন জিদান। তার মতে এই পুরস্কার জিততে না পারাটাই বরং যৌক্তিক হবে। রিয়ালের কোচ হিসেবে প্রথম বছরে ফরাসী তারকা একে একে জয় করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা। এ কারণেই ফিফার বিচারে বছরের সেরা কোচের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন জিদান। তার সঙ্গে শীর্ষ তিনে আছেন প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়ন লিচেস্টার সিটির কোচ ক্লাডিও রানিয়েরি ও ইউরো ২০১৬ জয়ী পর্তুগীজ কোচ ফার্নান্ডো সান্টোস। জিদান বিশ্বাস করেন এই পুরস্কার জয়ে তার থেকে অভিজ্ঞ অপর দুই কোচই বেশি যোগ্যতা রাখে। পুরস্কারটি জিততে পারবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জিদান বলেন, না অবশ্যই না। আমি মনে করি অন্য কেউ জিতলেই সেটা বেশি যুক্তিযুক্ত হবে। আমি মাত্রই এই পেশায় এসেছি, এখানেও সবকিছুই নতুন। আমাকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এই পেশায় অনেক চড়াই উতরাই রয়েছে, সেগুলোর অভিজ্ঞতা আমারও হবে। ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা বলেন, এখন আমি আগের থেকে নার্ভাস কম অনুভব করি। আমি নিজের কাজ নিয়ে খুশি। এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু ক্লাবের যা লক্ষ্য ছিল তা পূরণ হয়েছে, এতেই আমি খুশি। তারপরও সবকিছুতেই আমার উন্নতি করতে হবে। এটাই ফুটবল। একজন খেলোয়াড় হিসেবেও আমি এই ধরনের চিন্তাই সবসময় করেছি। ৩৩, ৩৪ বছর বয়সে আমি সবসময়ই উন্নতির চিন্তা করেছি, এখন কোচ হিসেবে এই চিন্তাটা আরও বেশি। তবে আমি একটি বিষয় সবসময়ই বিশ্বাস করি ফুটবলের প্রতি আমার ভালবাসা আছে। আমার মনে হয় সব কোচই প্রায় একই ধরনের চিন্তা করে, এখানে খুব বেশি পার্থক্য নেই। রিয়ালের হয়ে প্রথম বছর আমি অনেক কিছুই অর্জন করেছি।
×