ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিএসসির সঙ্গে যৌথ মালিকানায় জাহাজ কিনবে সাইফ পাওয়ার

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

বিএসসির সঙ্গে যৌথ মালিকানায় জাহাজ কিনবে সাইফ পাওয়ার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) সাথে যৌথ মালিকানায় সমুদ্রগামী বড় জাহাজ কিনতে চায় বেসরকারী খাতের সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড। সম্প্রতি সাইফ পাওয়ারটেক বিএসসির কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে বিএসসি। মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রস্তাবে সমান অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দুটি বড় জাহাজ কেনার কথা বলা হয়েছে, যা দিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিবহন করা হবে। জাহাজ কেনার জন্য স্থানীয় অথবা বিদেশী ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া হবে। প্রতিটি জাহাজের ধারণক্ষমতা হবে ১ লাখ মেট্রিক টন। সাইফ পাওয়ারটেকের প্রস্তাব পাওয়ার পর বিএসসি তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয় তাদের মতামতের জন্য। মন্ত্রণালয় সম্মত হলে বিএসসি আলোচিত বিষয়ে সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি সই করবে। তারপর চূড়ান্ত আলোচনা ও দর কষাকষি হবে। উল্লেখ, বিপিসি প্রতি বছর দুবাইয়ের আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডিএনওসি) এবং সৌদির এ্যারামকো থেকে ১৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে থাকে। নিজেদের জাহাজ না থাকায় বিদেশী জাহাজ ভাড়া করে তা দিয়ে তেল আমদানি করতে হয়। এই সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে চায় সাইফ পাওয়ারটেক। পেট্রোবাংলার তেল পরিবহন করেই একটি জাহাজ লাভজনকভাবে পরিচালিত হতে পারে। সাইফ পাওয়ারটেকের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যৌথভাবে জাহাজ কেনা হলে বিএসসির মুনাফা অনেক বেড়ে যাবে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের আরও বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে। অন্যদিকে বিদেশী জাহাজ ভাড়া বাবদ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাইরে চলে যাবে না। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন প্রস্তাবের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমরা যৌথভাবে ব্যবসা করতে চাই। আমাদের প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে তা উভয় কোম্পানি এবং দেশের জন্য লাভজনক হবে। বর্তমানে বিদেশী জাহাজে করে তেল পরিবহন করায় মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে ভাড়া মেটাতে হয়, যা কার্যত দেশের বাইরে চলে যায়। দেশীয় জাহাজে করে তেল আমদানি করা হলে বৈদেশিক মুদ্রার কিছুটা সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে বিএসসির আয় অনেক বাড়বে। বর্তমানে বিএসসির বহরে ৭৬ হাজার টন তেল পরিবহনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৫টি জাহাজ রয়েছে। তবে গভীর সমুদ্রে চলাচলের উপযোগী নয়। জাহাজগুলো মূলত মাদার ভেসেল থেকে তেল খালাস ও পরিবহন করে থাকে। ১৯৭২ সালে বিএসসি গঠন করে সবধরনের তেল পরিবহনের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনকে। ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিএসসি। বর্তমানে ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ১৯ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২৪ দশমিক ৭১ শতাংশ শেয়ার। সাইফ পাওয়ারটেক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৪ সালে। এর উদ্যোক্তাদের কাছে ৪০ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ২০ দশমিক ৬৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৯ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
×