ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাইব্যুনাল সরানো প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী

সুপ্রীমকোর্ট যতবার চিঠি দেবে ততবারই পাল্টা চিঠি

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

সুপ্রীমকোর্ট যতবার চিঠি দেবে  ততবারই পাল্টা চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরনো হাইকোর্ট ভবন থেকে সরানোর জন্য সুপ্রীমকোর্ট প্রশাসন যতবার চিঠি দেবে ততবারই তা না সরানো জন্য পুনর্বিবেচনা করতে পাল্টা চিঠি দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন নির্বাচনের প্রতীক তালিকা থেকে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বাদ দিয়ে সংসদ নির্বাচন বিধিমালা সংশোধনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সুপ্রীমকোর্টের উভয় বিভাগে বিচাপতি নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা যখনই দেখা দেবে তখনই বিচারপতি নিয়োগ হবে। বুধবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আয়োজিত স্পেশাল জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের ‘ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং কোর্সের’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুরাতন হাইকোর্ট ভবন থেকে সরানোর জন্য যতবার আদেশ পাব ততবারই এটি পুনর্বিবেচনার জন্য চিঠি পাঠাব। আমাদের মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধের বিচারের অভিজ্ঞতা ছিল না। আমরা এই ট্রাইব্যুনাল ও প্রসিকিউশন টিম গঠন করেছি। ক্রমান্বয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বেড়েছে। আজকে এটা সারাবিশ্বে স্বীকৃত কারণ এই ট্রাইব্যুনাল আমাদের সুষ্ঠু বিচার উপহার দিতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুরোপুরিভাবে মেনে চলছে এবং বিচার বিভাগের ওপর কোন হস্তক্ষেপ করছে না- এটিও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গÑ নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন সভার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা থাকতে হবে। এটি থাকলেই আমরা গণতন্ত্রে যে ভারসাম্যের কথা বলি তা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং গণতন্ত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হলেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা হয় এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা হলে গণতন্ত্রের উন্নয়ন হয় এবং দেশ শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ায়। বর্তমান সরকার এই নীতিতে বিশ্বাস করে এবং এই নীতিই পালন করে যাবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দাঁড়িপাল্লা’ বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের প্রতীক। সম্প্রতি সুপ্রীমকোর্ট এক প্রশাসনিক আদেশে ‘দাঁড়িপাল্লাকে’ নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার আদেশ জারি করেছে। এই আদেশ মোতাবেক নির্বাচন কমিশন ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ব্যবহার না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটি ভেটিং এর জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। প্রতীক নির্বাচনের এখতিয়ার হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যদি কোন প্রতীককে বাদ দিতে চায় বা কোন প্রতীককে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, আইনত সেটা তারা পারে। আইনত যেহেতু তারা সেটা পারে, তাই আইন মন্ত্রণালয় মতামত দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত সঠিক আছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়ে সরকারের আইন প্রণয়ন করার কোন পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংবিধানে এটা স্পষ্টভাবেই লেখা আছে, এটা রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। রাষ্ট্রপতি এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিবেন। যদি আইন প্রণয়ন করতে হয় তাহলে রাষ্ট্রপতিই বলবেন। রাষ্ট্রপতির নির্দেশনার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি একটা আলাপ আলোচনা করছেন। সেই ক্ষেত্রে সরকার থেকে এমন কোন কথা আমি বলতে চাই না। যেক্ষেত্রে এই আলাপ আলোচনায় সাফল্য বিঘিœত হয়। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে হ্যাঁ না ভোটে যে ইমেজটা নষ্ট করা হয়েছিল সেটা পুরুদ্ধার কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারই করেছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করছি এই আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এমন কিছু বেরিয়ে আসুক যেটা দেশে গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় করতে এবং গণতন্ত্রের অত্যন্ত মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে নির্বাচন সেই নির্বাচনটা অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সহায়ক হোক। তিনি বলেন, এই সরকার বদ্ধপরিকর একটা অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে। হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি বিচারক নিয়োগ দেন। বিচারক নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেই ক্ষেত্রে যখনই বিচারক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে তখনই বিচারপতি নিয়োগ হবে। এ ক্ষেত্রে নিয়োগটা যাতে বিতর্কের উর্ধে থাকে এবং যোগ্য লোক নিয়োগ দেয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে এবং বিচারক নিয়োগের ব্যাপারে আইন প্রণয়ন এ বছরের মধ্যেই করা হবে।
×