ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

রুশ সাইবার হামলার নিশ্চিত প্রমাণ চান নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট

গোয়েন্দাদের চাপ দেবেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২ জানুয়ারি ২০১৭

গোয়েন্দাদের চাপ দেবেন ট্রাম্প

২০১৬-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিঘিœত করতে চালানো সাইবার হামলার পেছনে রাশিয়ার হাত ছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এ বক্তব্য যে সঠিক ছিল, তা নিশ্চিত করতে তাদের ওপর চাপ দিতে চান নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি শনিবার এ কথা জানান। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। ট্রাম্প বলেন, গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের বক্তব্য ইতোপূর্বে ভুল প্রমাণিত হয়েছিল। তিনি ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক আক্রমণের আগে এক সরকারী মূল্যায়নের প্রতি ইঙ্গিত করছিলেন। এতে ইরাকের সাবেক নেতা সাদ্দাম হোসেনের হাতে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র রয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। ট্রাম্প ফ্লোরিডার পাম বিচের তার বাসভবনে নিউইয়ার্স ইডে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ট্রাম্প বলেন, যদি আপনারা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র সম্পর্কিত তথ্যের কথা ভাবেন, তবে সেটি ছিল বিপর্যয়কর এবং তারা ভুল করেছিল। আর সে জন্য আমি চাই তারা নিশ্চিত হোক। যদি তারা সেটা না জানে, তবে তা অন্যায়ই হবে বলে আমি মনে করি। প্রেস পুল রিপোর্ট এ কথা জানায়। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ঘোষণা করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে রাশিয়া ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ই-মেইল এ্যাকাউন্টগুলো হ্যাক করেছিল বলে এর আগে তিনি অভিযোগ করেন। ওবামা সাইবার হামলার শাস্তিস্বরূপ বেশকিছু সংখ্যক রুশ কূটনীতিককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তিনি বলেন, রুশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই কেবল এসব হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে। রাশিয়া প্রথমে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার সঙ্কল্প ব্যক্ত করলেও শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন তার সরকার প্রতিশোধ হিসেবে মার্কিন কূটনীতিকদের বহিষ্কার করবে না বলে জানান। এতে ট্রাম্প পুতিনের প্রশংসা করে টুইট করেন (ভি. পুতিনের) বিলম্ব করার বিষয়ে বড় পদক্ষেপ। তিনি যে খুবই স্মার্ট তা আমার সব সময়েই জানা আছে। শনিবার ট্রাম্প ছাড়া অন্যরাও সাইবার হামলার জন্য দায়ী হতে পারে বলে তার বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমি হ্যাকিং সম্পর্কে অনেক কিছু জানি। আর হ্যাকিং প্রমাণ করা খুবই কঠিন। কাজেই অন্য কেউই তা করে থাকতে পারে। আর আমি এমন কিছু জানি যা অন্যরা জানে না। সে জন্য তারা পরিস্থিতি নিয়ে নিশ্চিত হতে পারে না। কম্পিউটার ঝুঁকিপূর্ণ ধরনের যোগাযোগ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ট্রাম্প আরও বলেন, খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা, যদি আপনার কাছে কোন জরুরী বিষয় থাকে, তবে আপনি তা লিখে ফেলুন এবং পুরনো কায়দায় কুরিয়ারের সাহায্যে তা পাঠিয়ে দিন, কারণ আমি আপনাদের বলব, কোন কম্পিউটারই নিরাপদ নয়। তারা কি বলে তা আমি গ্রাহ্য করি না, কোন কম্পিউটারই নিরাপদ নয়। আমার ১০ বছরের এক ছেলে আছে, সে কম্পিউটার দিয়ে যে কোন কিছু করতে পারে। আপনারা যদি আসলেই গোপনে কোন কিছু পাঠাত চান, তবে তা লিখে কুরিয়ার দিয়ে পাঠিয়ে দিন। আরেক প্রসঙ্গে ওবামার নিজের গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ উদ্যোগ এ্যাফোর্ডেবল কেয়ার এ্যাক্ট রক্ষা করার বিষয়ে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কথা বলতে আগামী সপ্তাহে তার ক্যাপিটল হিলে যাওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়। কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা আইনটি রদ করার পরিকল্পনা করছেন। ট্রাম্প বলেন, স্বাস্থ্যসেবার প্রিমিয়াম বৃদ্ধি থেকে ওবামার আমলে চালু ওই ব্যবস্থা যে কাজ করছে না তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ট্রাম্প অক্টোবরে নির্বাচনী প্রচারকালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মন্তব্যের উদ্ধৃতি দেন। এতে ক্লিনটন বলেছিলেন যে, স্বাস্থ্যবীমার বাইরে থাকা লোকজন বীমা করতে থাকলেও প্রিমিয়াম বৃদ্ধি লাখ লাখ শ্রমজীবী পরিবারের জন্য দুর্দশা ডেকে আনছে। ক্লিনটন তার স্ত্রী ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারির পক্ষে প্রচার চালানোর সময় বলেন, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাগলামির কাজ। ট্রাম্প বলেন, বিল ক্লিনটন এটি বলেছিলেন, প্রচারকালে যখন তিনি তা বলেছিলেন, তখন সেকথা বলা সম্ভবত তার জন্য উচিত হয়নি। এটি ব্যয়সাধ্য নয়, এটি কাজ করছে না এবং পাগলামিতে পরিণত হয়েছে।
×