ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উপকূলীয় এলাকায় কয়েকটি লাইসেন্স দেয়া হতে পারে

ঢাকায় আর এফএম ব্যান্ড রেডিওর তরঙ্গ বরাদ্দ দেবে না বিটিআরসি

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২২ ডিসেম্বর ২০১৬

ঢাকায় আর এফএম ব্যান্ড রেডিওর তরঙ্গ বরাদ্দ দেবে না বিটিআরসি

ফিরোজ মান্না ॥ ঢাকায় আর কোন এফএম ব্যান্ড রেডিওর তরঙ্গ বরাদ্দ দেবে না বিটিআরসি। এফএম ব্যান্ডের জন্য তরঙ্গ অবশিষ্ট নেই। বর্তমানে এফএম ব্যান্ডে ছয়টি নির্দিষ্ট তরঙ্গ খালি রাখা হয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জনগুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহারের জন্য। তবে উপকূলীয় এলাকায় কয়েকটি লাইসেন্স দেয়া যেতে পারে। সম্প্রতি বিটিআরসি লিখিতভাবে তথ্য মন্ত্রণালয়কে এই অনুরোধ জানিয়েছে। বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বেতারসহ মোট ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে তথ্য মন্ত্রণালয় লাইসেন্স দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৬টি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট তরঙ্গ বরাদ্দ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৮টিই বেসরকারী রেডিও। বাংলাদেশ বেতারকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৬টি নির্দিষ্ট তরঙ্গ। এর মধ্যে তিনটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ বরাদ্দ রাখা হয়েছে কমিউনিটি রেডিওর জন্য। দুর্যোগের বার্তা পৌঁছে দিতে উপকূলীয় এলাকায় আরও কয়েকটি কমিউনিটি রেডিওর লাইসেন্স দেয়া হতে পারে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাহাজান মাহমুদ বলেন, বিটিআরসির অধীনে এত লাইসেন্স দেয়া হয়েছে যে, এগুলো ঠিক মতো মনিটর করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জনবল সঙ্কটের কারণে বড় লাইসেন্সগুলোই মনিটর করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আড়াই হাজারের বেশি লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। এখন আর বিটিআরসি লাইসেন্স বাড়ানোর পক্ষে না, বরং কিছু লাইসেন্স কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কমিশনে আলোচনা করব। ৫ বছরের জন্য এক হাজার ৪টি ভিএসপি লাইসেন্স দেয়া হয়। এই লাইসেন্সের মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তরা বৈধ পথে কল আদান প্রদান করবে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল এই লাইসেন্সগুলো নানা কারণে কোন কল আনতে পারছে না। আইজিডব্লিউ (ইন্টারনেট গেটওয়ে) লাইসেন্সধারীরাই কল আদান প্রদান করছে। বিটিআরসি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কথা চিন্তা করে ভিএসপি (ভয়েস সার্ভিস প্রোবাইডর) বিভিন্ন আইজিডব্লিউর সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এখান থেকে প্রতিমাসে কিছু টাকা ভিএসপি লাইসেন্সধারীরা পাচ্ছেন। এই লাইসেন্সগুলো ৫ বছর পরে বাতিল করে দেয়া হতে পারে। কারণ এগুলো বিটিআরসির জন্য এক ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এফএম বেতারকেন্দ্র স্থাপন, সম্প্রচার ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১০ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট তথ্য মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্প্রচারের লাইসেন্স দেয়া। বিটিআরসি লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রচারের জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়। জাতীয় তরঙ্গ বরাদ্দ নীতিমালা (এনএফপি) অনুযায়ী এফএম রেডিওর তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয়। এনএফপিতে ৮৭ ও ১০৮ মেগাহার্টজ এফএম তরঙ্গ হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বর্তমানে ছয়টি নির্দিষ্ট তরঙ্গ খালি রাখা হয়েছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও শিক্ষাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহারের জন্য। এ কারণে ৬টি তরঙ্গ সংরক্ষণ করা হয়েছে। তাই এখন আর বাণিজ্যিকভিত্তিতে বরাদ্দের কোন তরঙ্গ খালি নেই। বিটিআরসি তথ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছে বেসরকারী মালিকানায় নতুন কোন এফএম রেডিওকে লাইসেন্স না দেয়ার। দেশের অন্য কোন স্থানে তরঙ্গের প্রাপ্যতা সাপেক্ষে সম্প্রচারের লাইসেন্স দেয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, তরঙ্গ একটি মূল্যবান ও সীমিত জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে বিটিআরসির সতর্ক অবস্থান রয়েছে। তাছাড়া তরঙ্গ বরাদ্দের জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ীই এখন আর কোন এফএম ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া যাচ্ছে না। সম্প্রচারের জন্য এফএম রেডিও স্টেশনকে ২০০ কিলোহার্টজ করে তরঙ্গ বরাদ্দ দেয়া হয়। একই স্থানে পারস্পরিক তরঙ্গের প্রতিবন্ধকতা এড়াতে দুটি রেডিও স্টেশনের মধ্যে ২০০ কিলোহার্টজ তরঙ্গ খালি রাখা হয়। বার্ষিক তরঙ্গ ফি হিসেবে প্রতি কিলোহার্টজের জন্য ফি নেয়া হয় ১ হাজার টাকা করে। বেশ কয়েকটি আবেদন রয়েছে যেগুলোর ৪০০ কিলোহার্টজ তরঙ্গের প্রয়োজন। ৪০০ কিলোহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দের বিষয়ে বিটিআরসি এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। বর্তমান অবস্থায় সারা দেশে এফএম ব্যান্ডের সর্বোচ্চ ৫১টি লাইসেন্স দেয়া সম্ভব।
×