ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্টিল স্ট্রাকচার ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র হওয়া সম্ভব নয় ॥ গণপূর্তমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬

স্টিল স্ট্রাকচার ছাড়া উন্নত রাষ্ট্র হওয়া সম্ভব নয় ॥ গণপূর্তমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভবন নির্মাণে স্টিল স্ট্রাকচার ছাড়া উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া সম্ভব নয় মন্তব্য করে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বর্তমানে যত ভবন হবে সবগুলোই হাইরাইজ। থাকবে গ্রিনস্পেসও। ২০২১ সালে মধ্যম ও ৪০ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে স্টিল স্ট্রাকচারের বিকল্প নেই। কারণ আমাদের হাতে সময় কম। সামনের সব ভবন নির্মাণে আমরা স্টিল স্ট্রাকচারে যাওয়ার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, দেশের স্টিল শিল্প অনেক এগিয়ে গেছে। স্টিল কাঠামো ব্যবহার করে উঁচু ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। স্টিল কাঠামো ব্যবহারে সবাইকে আরও উৎসাহী হতে হবে। পূর্বাচলে আমরা যে ৩০ থেকে ৫০ তলা ভবনগুলো নির্মাণ করছি সেখানে স্টিল কাঠামো ব্যবহারের চিন্তা চলছে। রবিবার সকালে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন স্টিল স্ট্রাকচার নিউ এরা ইন ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইইবি ঢাকা কেন্দ্র ও স্টিল বিল্ডিং ম্যানুফ্যাকচারর্স এ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এসবিএমএ) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রমনায় আইইবি মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ১০টি স্টলে স্টিল বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন পণ্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। স্টলগুলোতে স্টিল দিয়ে কিভাবে ভবন গড়ে ওঠে এবং এর উপকারিতা কীÑ জানানো হয় তাও। দেখানো হয় স্টিলের বিভিন্ন উপকরণ। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন স্টলগুলো ঘুরে দেখেন এবং তার বক্তব্যে দেশের স্টিল শিল্প এগিয়ে যাওয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে একটা এনআরবি ভবন হবে ৪০ তলা। পূর্বাচলে ৭০ হাজার এ্যাপার্টমেন্ট হবে যেখানে সবগুলো ভবনই হবে ৩৫ তলার উপরে। ৫০ তলা পর্যন্ত হতে পারে। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পূর্বাচলে ৭১ তলা বিশিষ্ট দুটি আইকনিক টাওয়ার নির্মাণের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এসব ভবনে আমরা স্টিল স্ট্রাকচারে যেতে পারি। স্টিল স্ট্রাকচার হলে ভবনগুলো নির্মাণে ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি ভূমিকম্প সহনশীল হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তা শুধু থাকার জায়গা চান। উত্তরা/পূর্বাচল মিলিয়ে আমরা মোট ১ লাখ এ্যাপার্টমেন্ট তৈরি করছি। থাকার জন্য একটা বেডরুমই তো চাই, আর তো কিছু না। মন্ত্রী বলেন, রাজধানীতে ওয়াসার স্যুয়ারেজ সিস্টেম কোথায় যাচ্ছে আমি জানি না। স্যুয়ারেজ লাইন আছে কিনা তাও জানি না। ওয়াসার কোন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তো দেখি না। একটা আছে পাগলা এলাকায়, কিন্তু সেখানে স্যুয়ারেজের কয়টা লাইন গেছে জানা নেই। বর্তমানে সকল নতুন ভবনে নিজস্ব স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট রাখার জন্য রাজউককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওয়াসা কি করল না করল সেটা দেখে লাভ নেই। সকল ভবনে নিজস্ব ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বানাতে হবে। উন্নত বিশ্বে এটা প্রচলিত, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে প্রক্রিয়াজাত করে সেই পানিটা গার্ডেনিংয়ে ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে জায়গা কম মানুষ বেশি। তাই উপরের দিকে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। সরকারের বিভিন্ন ভবন এক সময় ৫ তলার উপরে চিন্তাই করা হতো না। বর্তমানে সকল ভবনই ২০ তলার উপরে নির্মিত হচ্ছে। স্টিল বিল্ডিং ম্যানুফ্যাকচারর্স এ্যাসেসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এসবিএমএ) সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আরসিসি ভবন নির্মাণ করতে যেখানে দেড় থেকে ২ বছর সময় লাগে সেখানে মাত্র ৬ মাসেই স্টিল কাঠামো ব্যবহার করে একটি সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা সম্ভব। তবু আমাদের দেশে স্টিল কাঠামো ব্যবহারে মানুষের অনীহার অন্যতম কারণ এ বিষয়ে তথ্যের অপ্রতুলতা। এতে সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, একটি দেশের উন্নয়নের অন্যতম মাপকাঠী হচ্ছে সেদেশের মাথাপিছু স্টিল ব্যবহারের পরিমাণ। উন্নত দেশে স্টিল ব্যবহারের গড় হার যেখানে ৪০০ কেজি সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ২৫ কেজি। উদ্বোধনী অধিবেশন সঞ্চালনা করেন আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রশীদ চৌধুরী মাসুদ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী জাকির হোসেন, রবিউল্লাহ প্রিন্স, শাহজাহান খাদেম প্রমুখ।
×