স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার জন্য বিএনপির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের একটি তালিকা বঙ্গভবনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএনপির সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন ও বেলাল হোসেন এ তালিকা বঙ্গভবনে পৌঁছে দেন। তবে তালিকায় কাদের নাম রয়েছে তা বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানা যায়নি।
জানা যায়, বঙ্গভবনে গিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। এ তালিকায় আরও যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলোচনায় বসবেন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল। দলের সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম বৃহস্পতিবার দুপুরেই বঙ্গভবনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব বরাবর ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান। বঙ্গভবন থেকে ফিরে বিএনপির সহদফতর সম্পাদক মুনির হোসেন সাংবাদিকদের কাছে বলেন, ১০ সদস্যের তালিকা আমরা বঙ্গভবনে পৌঁছে দিয়েছি। সেখানে ডেপুটি সেক্রেটারি জাফরুল্লাহ আমাদের তালিকা গ্রহণ করেছেন।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ১৮ নবেম্বর রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে ১৩ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এ প্রস্তাবে তিনি নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বাছাই কমিটি গঠনের রূপরেখা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা এবং সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ১৩টি প্রস্তাব দেন।
খালেদা জিয়ার দেয়া ১৩ দফা প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছাতে ২০ নবেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার টেলিফোনে রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের সঙ্গে কথা বলেন। কোন জবাব না পেয়ে ২৩ নবেম্বর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাত চায়। এতেও সাড়া না পেয়ে ৬ ডিসেম্বর দুপুরে খালেদা জিয়ার ১৩ দফা প্রস্তাবসহ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে একটি চিঠি বঙ্গভবনে পৌঁছায় বিএনপির ২ জন সিনিয়র নেতা। তবে এর আগেই ওই দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাষ্ট্রপতি উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বঙ্গভবন ত্যাগ করেন।
রাষ্ট্রপতি দেশে ফেরার পর ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভবন থেকে চিঠি পাঠিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনার জন্য বিএনপির কাছে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম চাওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অনধিক চারজন কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শীঘ্রই উত্তীর্ণ হচ্ছে, সেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন গঠনে মাহামান্য রাষ্ট্রপতি আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সেই লক্ষ্যে ১৮ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনে মাহামান্য রাষ্ট্রপতি আপনাদের দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।
