ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটসম্যানদের নিয়ে খেলা করছে অশ্বিন : মুস্তাক

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

ব্যাটসম্যানদের নিয়ে খেলা করছে অশ্বিন : মুস্তাক

অনলাইন ডেস্ক ॥ ওয়ান ডে-তে মোট উইকেট সংখ্যা ৩৪৬টি। বর্তমানে লাহৌরে পাক জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির হেড কোচ। ইংল্যান্ড দলের বোলিং কোচের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইয়াসির শাহ থেকে মইন আলির উত্থানের জ্বলন্ত সাক্ষী তিনি, প্রাক্তন লেগস্পিনার মুস্তাক আমেদ এক পাক ওয়েবসাইটে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়ে প্রতিক্রিয়াও। সোমবারের সেই দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের নির্বাচিত অংশ... প্রশ্ন: অশ্বিনের পারফরম্যান্স আপনাকে কতটা মুগ্ধ করছে? ভারতীয় অফস্পিনারের বর্তমান ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার হওয়ার রহস্য কী? মুস্তাক: অশ্বিনের উন্নতি অসাধারণ। ভারতীয় দলের সাফল্যের পিছনে ওর ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা শুধু বোলার নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবেও। রাউন্ড দ্য উইকেট এবং ওভার দ্য উইকেট, দু’দিক থেকেই ওর বোলিং খুব কার্যকর। কারণ, বোলিং ক্রিজটা ও খুব ভাল ব্যবহার করে। সবচেয়ে বড় কথা, অশ্বিন বল হাতে আক্ষরিক অর্থে ব্যাটসম্যানের সঙ্গে খেলা করতে পারে। করছেও। নিজের বোলিং আক্রমণ অনুযায়ী নিখুঁত ফিল্ডিং সাজায়। ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে প্রচণ্ড সচেতন। এই গুণগুলো অশ্বিনকে টপ কোয়ালিটি স্পিনার করে তুলেছে। যার ফল তো সবাই দেখতেই পাচ্ছে। প্র: ইয়াসির শাহের এখনও অবধি উন্নতিতেও আপনি নিশ্চয়ই মুগ্ধ। ওর আরও ভাল লেগস্পিনার হয়ে উঠতে গেলে কোন কোন জায়গায় এখনও উন্নতি দরকার? মুস্তাক: আমি যখন পাকিস্তান দলে বোলিং কোচ হই, আমাদের হাতে কোনও ভাল স্পিনার ছিল না। আমি সেই সময়কার নির্বাচকদের চেয়ারম্যান মইন খানকে অনুরোধ করি, একটা স্পিনার ক্যাম্প বসাতে, যেখানে আমাদের দেশের ঘরোয়া টুর্নামেন্টের উঠতি প্রতিভাদের একসঙ্গে দেখে নিয়ে কাউকে বাছা সম্ভব। সেই ক্যাম্পে ইয়াসিরকে প্রথম দেখি। কিন্তু গোড়ায় সমস্যা হল, রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ওর বোলিং করার অক্ষমতা। বোলিং অ্যাকশনও তেমন মসৃণ ছিল না। কিন্তু ওর যে ব্যাপারটা আমার নজর টেনেছিল, সেটা ওর মানসিকতা। মনে হয়েছিল, একটু সাহায্য করলে ইয়াসির খুব ভাল স্পিনার হয়ে উঠবে। পরের দেড় মাস টানা ওকে নিয়ে আমি পড়েছিলাম। তবে বড় কথা হল, প্লেয়ারের ভেতর কোচ তখনই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে, যখন দু’তরফই সেটা বিশ্বাস করবে। আমার আর ইয়াসিরের মধ্যে সেটা ছিল। যার ফল সবাই দেখছে। এ বছর যখন আমরা ইংল্যান্ড সফরে গেলাম, ইয়াসিরকে ইংলিশ কন্ডিশনে স্পিন বোলিংয়ের প্রতিটা ব্যাপার পুঙ্খানুপুঙ্খ বুঝিয়েছিলাম। তার ফলও সবাই দেখেছে। ও নিজের বোলিং নিয়ে সামান্য সমস্যায় পড়লেও আমার টিপস নিতে ছুটে আসে। এই তো সে দিন গোলাপি বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে বল করতে ইয়াসিরের সমস্যা হওয়ায় ওকে তার জন্য যা-যা করা দরকার বলে দিলাম। ইয়াসিরের আরও উন্নতির জন্য প্রথম দরকার, ওর গুগলি ডেলিভারিটাকে আরও ভাল করা। আমি যখন পাকিস্তান কোচিং স্টাফে ছিলাম, ইয়াসির গুগলিতে উইকেট তুলত। তার পরে ওর কাঁধে একটা ব্যথা শুরু হওয়ায় গুগলির প্র্যাকটিস নেটে প্রায় বন্ধই করে দেয়। সেটা কিন্তু চলবে না। প্র: মইন আলি কি কখনও বিশ্বমানের স্পিনার হয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করেন? মুস্তাক: তার জন্য মইনের বোলিংয়ে আরও বৈচিত্র আনতে হবে। ওর ব্যর্থ হওয়ার সামান্য ভয়ও নেই। যেটা ওকে দ্বিগুণ ভাল বোলার করে তোলে বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের সামনে। ওর অফস্পিনার হিসেবে যে মান, তার চেয়ে ওকে আরও কার্যকর দেখায়। এর সঙ্গে যদি মইন বোলিং স্পিড, পিচকে সঠিক ভাবে বোঝা, বিপক্ষ ব্যাটসম্যানের শক্তি-দুর্বলতাকে ধরে ফেলা, এই গুণগুলো আরও রপ্ত করতে পারে, তা হলে নিশ্চয়ই বিশ্বের একজন সেরা স্পিনার হয়ে উঠবে। প্র: পিসিবি-র কী কী শিক্ষা নেওয়া উচিত ইসিবি থেকে? মুস্তাক: ইংলিশ ক্রিকেট আর পাক ক্রিকেট দু’টো সম্পূর্ণ আলাদা সংস্কৃতি। অন্যদের থেকে অনেক কিছু শেখাই যায়, কিন্তু সেগুলোকে নিজেদের ক্ষমতা অনুযায়ী কাজে লাগাতে হয়। লাহৌরে আমাদের এনসিএ-তে আমি সেই চেষ্টাই করছি। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×