ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হরিপুর সীমান্তে দুইদেশের স্বজনদের মিলন মেলা

প্রকাশিত: ০১:০৩, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

হরিপুর সীমান্তে দুইদেশের স্বজনদের মিলন মেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার কোঁচল ও চাঁপাসার এবং ভারতের নাড়গাঁও ও মাকারহাট সীমান্তের তাঁরকাটার এপার-ওপারে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুক্রবার দুই বাংলার লাখো মানুষের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ষ পুঞ্জিকা অনুযায়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকাজন প্রতি বছর শ্রী-শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পুঁজা উপলক্ষ্যে এ মেলা উদযাপন করেন। আর এ পুঁজা উপলক্ষে প্রতি বছরের এই দিনে দূরদূড়ান্ত থেকে দুইদেশের স্বজনরা ভীড় করেন সীমান্তের ৩৪৫ ও ৩৪৬ নম্বর পিলার এলাকায়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুক্রবার সকাল থেকে দূরদূড়ান্ত থেকে দুইদেশের স্বজনরা সীমান্তে সমবেত হতে থাকে। স্বজনদের সাথে দেখা ও কথা বলার জন্য সকাল থেকে সীঁমান্তের এপার-ওপারে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় দুইদেশের হাজার হাজার মানুষকে। শেষ পর্যন্ত দুপুর ১২ টায় স্বজনদের ধরে রাখতে পারেনি দুইদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী। তাঁরকাটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিকভাবেই তাঁরকাটার এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয় একে অপরের সঙ্গে। আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী। স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা দিনাজপুর জেলার কাহারল উপজেলার বাসিন্দা হাজেরা বেগম (৬৫) জানান, এবার দেখা করেছেন তার ছোট ভাই মুসার সঙ্গে। স্বাধীনতার সময় আমার বিয়ে হয়। সর্বশেষ ২০ বছর আগে বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সাথে আমার দেখা হয়েছিল। ২০ বছর পর আজ ভাই-বোনদের সাথে দেখা পেরে খুব আনন্দ পেয়েছি। ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা রহিমা, শাকির. মাজেদা, লক্ষীরানী, গিতাদেবী সরেন মাড্ডীসহ একাধিক ব্যক্তি তাঁরকাটার এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে নিজনিজ স্বজনদের সাথে কথা বলে এবং কাটাতাঁরের ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও কাপড়-চোপড় দিতে পেড়ে আনন্দের অনুভুতির কথা ব্যক্ত করেন। হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুছ বলেন, কড়া প্রহরা সত্ত্বেও অনেকে তাঁরকাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করা ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে শ্রী-শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পুঁজা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বলেন, এবার স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও বিএসএফ’র পক্ষ থেকে সীমান্তে সমবেত হতে বাধার না দেওয়ার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার দু-দেশের স্বজনরা সহজেই তাঁরকাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন।
×