ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বুদাপেস্টগামী ফ্লাইটে ত্রুটির ঘটনায় ক্ষোভ সংসদীয় কমিটির

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

বুদাপেস্টগামী ফ্লাইটে ত্রুটির ঘটনায় ক্ষোভ সংসদীয় কমিটির

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বুদাপেস্টগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ত্রুটি দেখা দেয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার আগেই এ ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিহ্নত করে শাস্তি নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এদিকে কমিটির বৈঠকে ওই ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীসহ ভিভিআইপিদের পরিবহনে একটি এক্সিকিউটিভ বিমান কেনার কথা জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটি সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান। বৈঠকে কমিটি সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, অধ্যাপক মোঃ আলী আশরাফ ও তানভীর ইমাম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি লে. কর্নেল (অব) ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এ নিয়ে কমিটির সদস্যরা গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনটি কমিটি গঠনের কথা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার আগেই দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি আগেও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ থেকে ফেরার সময় একটি ফ্লাইটে এয়ারপোর্টের রানওয়েতে ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। ওই ঘটনায় কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল তাও জানতে চাওয়া হয়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। তবে আমরা তাতে খুশি হতে পারিনি। ওই ঘটনায় যে ধরনের দায়িত্বহীন আচরণ করা হয়, সেই হিসেবে আরও বেশি শাস্তি দেয়া উচিত ছিল। এ সকল ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের তদন্ত রিপোর্ট দেখে প্রয়োজন মনে করলে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি সাব কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ঘটনার জন্য আমাকে দায়ী করে কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ঘটনা কেন তা খতিয়ে দেখা দরকার। এজন্য সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি, বিমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি এবং মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিমানকে আগামী পহেলা ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্য দুই কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিমানকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ফেরার আগেই যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, বিমানটি ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে। তাই তদন্ত করে যার দায় পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই তাৎক্ষণিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে। মন্ত্রী বলেন, একটি ফ্লাইটে বিভিন্ন গ্রুপ, বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে। অনেক গ্রুপ আছে। দু’একদিনের মধ্যে মোটামুটিভাবে প্রাথমিকভাবে যারা দায়ী তারা চিহ্নিহ্নত হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই জড়িতদের শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, বিমান ইতোমধ্যে একটি রিপোর্ট দিয়েছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইঞ্জিনের ‘ফুয়েল প্রেসার’ কমে যাচ্ছিল। সেখানে দেখা গেছে, একটি নাট আলগা হয়ে গিয়েছিল। যার কারণে সিপেসটা হয়েছে। সিপেস হওয়াতে ফুয়েল প্রেসার কমে যাচ্ছিল। এটা নিয়ম হচ্ছে, এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে পাইলটের দায়িত্ব হচ্ছে নিকটবর্তী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করা। পাইলট অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই কাজটি করতে পেরেছে। বিমানেরই ইঞ্জিনিয়াররা, যারা অন বোর্ড ফ্লাইটে ছিলেন তারাই এটা খুঁজে বের করে প্রধানমন্ত্রীকে নিরাপদে বুদাপেস্টে পৌঁছে দিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিমানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদের আশস্ত করছি, ভিভিআইপি ফ্লাইটের জন্য একটি এক্সিকিউটিভ বিমান কেনা হবে। এটা নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তিনি অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শীঘ্রই এটা কেনা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
×