ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

৪৫ বছরেও নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় পায়নি এক পয়সা

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২০ নভেম্বর ২০১৬

৪৫ বছরেও নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় পায়নি এক পয়সা

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ স্বাধীনতাপরবর্তী পঁয়তাল্লিশ বছরেও এক পয়সা সরকারী বরাদ্দ আসেনি। অথচ প্রতিষ্ঠানটি শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্র ইসলামপুর মহল্লায় স্থাপিত। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে নবাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয় পুরাতন বাসনপট্টির দ্বিতল ভবনে। ১৯৪৭ সালে উঠে আসে অনন্ত বাবুর রাধা গোবিন্দ ঠাকুরবাড়ি চ-ীপ-পে। ১৯৬৩ সালে ভূমিকম্পে স্কুল ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হলে প্রতিষ্ঠানটি প্রাক্তন এমএলএ জমিদার রমেশ চন্দ্র বাগচীর আমবাগানে উঠে আসে। শহরের সুধীজনদের একান্ত প্রচেষ্টা ও দানে গড়ে ওঠে স্কুলের দ্বিতল পাকা ভবন। প্রথম এসএসসি পরীক্ষায় এ স্কুলের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করে ১৯৬৫ সালে। এরপর থেকে শুরু হয় খুঁড়িয়ে চলা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন স্কুলটি নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় ১৮ গুণীজন ও ব্যক্তিত্বের নাম উঠে এসেছে। তাদের অনেকেই এখন প্রয়াত বা দেশত্যাগ করেছে। মাঝে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে। ২০০৭ সালে শিক্ষাবিদ হাসিবুর রহমান প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর স্কুলটি আবার ঘুরে দাঁড়ায়। ২০১১ সালে ৭৫ বছরপূর্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি উন্নয়নের মোহনায় পৌঁছে। এ উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে শহরের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ ও স্কুলের সাবেক ছাত্ররা। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা চার শ’ ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৪ সাল থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীর বৃত্তি প্রদানসহ মেধাবী ও গরিব শিক্ষার্থীদের এসএসসির ফরম পূরণে নিয়মিত অর্থ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য শ্রেণীতে গরিব শিক্ষার্থীদের বারো মাসের বেতন মওকুফসহ নানান ধরনের সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে, যা চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার কোন প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয় না। এসব অর্থের পুরোটাই বেসরকারী উদ্যোগে বহন করা হচ্ছে। ২০১১ সালে কো-এডুকেশন কোর্স চালু হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে এক একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত স্কুলে বর্তমানে দেড় ডজনের বেশি শিক্ষক থাকলেও অবকাঠামোর দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের ঠাসাঠাসি করে বসতে হয়। এখন পর্যন্ত মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা বিশ্রামাগার করা সম্ভব হয়নি। নেই কোন প্রশাসনিক ভবন। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের চেম্বার। এর পরেও প্রধান শিক্ষক উদ্যোগ নিয়ে তৈরি করেছেন শেখ রাসেল কম্পিউটার রিসার্চ সেন্টার, যা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল শিক্ষাদানে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে সে ধরনের কোন মানসম্পন্ন বেসারকারী প্রতিষ্ঠান নেই। শুধু সরকারী অনুদান এলেই স্কুলটি সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।
×