ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ওপারে আটকা শত শত কোটি টাকা

রাজশাহী সীমান্তে দুই মাস ১৫ খাটাল বন্ধ

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২০ নভেম্বর ২০১৬

রাজশাহী সীমান্তে দুই মাস ১৫ খাটাল বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী অঞ্চলের একটি মাত্র সীমান্ত ছাড়া অন্য এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু-মহিষ আসা বন্ধ রয়েছে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে। ফলে গরু আমদানির সঙ্গে জড়িত শত শত মানুষ প্রায় বেকার হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু কেনা বাবদ এপারের ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকাও আটকে পড়েছে সীমান্তের ওপারে। এছাড়া বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের কেনা হাজার হাজার গরু-মহিষ সীমান্তের ওপারে আটকে রয়েছে সীমান্ত বন্ধ থাকায়। সম্প্রতি ব্যবসায়ীসহ এলাকার মানুষ টাস্কফোর্সের সভাপতি বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়ে সীমান্তপথে ভারতীয় গরু-মহিষ আমদানির পথ খুলে দেয়ার পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন। গরু ব্যবসায়ীরা জানান, দুই বছর আগেও সীমান্তপথে গরু-মহিষ আনতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দিত। অনেকক্ষেত্রে বিএসএফের গুলি চালানোর ফলে মারা গেছে বাংলাদেশী রাখাল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তের দুই পারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমঝোতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কারণে বিএসএফ গরু-মহিষ আনতে বাধা দিচ্ছে না। সীমান্তে গুলি চালানোর ঘটনাও কমে এসেছে। বিজিবি বাংলাদেশী রাখাল ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে রাখালদের সীমান্ত অতিক্রমের হার কমিয়ে আনতে পেরেছে। তারা আরও জানান, গত দু’মাস আগেও ভারতীয় রাখালরা সীমান্ত পয়েন্ট পর্যন্ত গরু-মহিষ দিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে বাংলাদেশী রাখালরা বুঝে নিয়ে নিরাপদে ফিরে আসছিল। কিন্তু গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিকাংশ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু-মহিষ ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শুধু বকচর সীমান্তপথে অনিয়মিতভাবে সীমিত গরু ঢুকতে দিচ্ছে। কিন্তু বকচর সীমান্ত এলাকাটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় এবং পথে গরুতে চাঁদাবাজি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা খাটাল আছে এমন সব সীমান্তপথে ভারত থেকে গরু-মহিষ আনতে দেয়ার দাবি করেছেন। ব্যবসায়ীরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৫-১৬টি খাটাল বা বিট দিয়েছে। দেশে গবাদিপশুর দৈনন্দিন ঘাটতি পূরণ ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে এসব খাটালের অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু বিজিবি নিরাপত্তার কথা বলে মনোহরপুর, অহেদপুর, জোহরপুর, জোহরপুর টেক, বাখের আলী, চরবাগডাঙ্গা, হাকিমপুর, রাজশাহীর চরমাঝাড়দিয়াড়, সাহাপুর, চারঘাট প্রভৃতি খাটাল দিয়ে গবাদিপশু ঢুকতে দিচ্ছে না গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে। রাজশাহীর খাটাল মালিক আনোয়ার বলেন, বৈধভাবে ভারত থেকে গবাদিপশু আসা যখন বন্ধ হয়ে যায় তখন এপারে দাম বাড়ে। আর এ সুযোগে বেশি লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে গরু-মহিষ পার করতে গিয়ে বিএসএফের গুলির শিকার হয়। এক্ষেত্রে বৈধভাবে গবাদিপশু আনলে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি যেমন এড়ানো যাবে তেমনি গরুর ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্বও আসবে।
×