ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আয় কমছে, বাড়ছে ব্যয়

সরকারী ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২০ নভেম্বর ২০১৬

সরকারী ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে ব্যয়। ফলে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর লোকসানি শাখার সংখ্যা। গত এক বছরে এসব ব্যাংকের লোকসানি শাখা দ্বিগুণ বেড়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে লোকসানি শাখার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪২টি। ২০১৫ সালের জুন শেষে এই ব্যাংকগুলোতে লোকসানি শাখা ছিল ২৮২টি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এই ৬ ব্যাংকে লোকসানি শাখা বেড়েছে ৩৬০টি। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকগুলোয় খেলাপি ঋণের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়ার কারণে একদিকে আয় কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আর এসব কারণে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে লোকসানি শাখা। এসব কারণে গত মাসে এই ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠকে ২০১৬ সালের জুনভিত্তিক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে পর্যালোচনা করা হয়। ব্যাংকগুলোর জুনভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দিন দিন ব্যাংকগুলো আরও খারাপ অবস্থায় যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোর কেবল লোকসানি শাখা বাড়ছে, তা নয়; খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতিও বাড়ছে। চলতি বছরের ৬ মাসের (জানুয়ারি-জুন) ব্যবধানে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা বেড়েছে ৪০৬টি। জুন শেষে এই চার ব্যাংকের লোকসানি শাখা দাঁড়িয়েছে ৫৮৯টিতে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে লোকসানি শাখার সংখ্যা ছিল ১৮৩টি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ‘সবচেয়ে বেশি লোকসানি শাখা এখন সোনালী ব্যাংকের। এই ব্যাংকের লোকসানি শাখা এখন ২৯০টি। গত বছরের জুনে ব্যাংকটিতে লোকসানি শাখা ছিল মাত্র ৮৯টি। রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকে লোকসানি শাখা এখন ১২৬টি। ২০১৫ সালের জুনে এই ব্যাংকটিতে লোকসানি শাখা ছিল মাত্র ২১টি। জনতা ব্যাংকের এখন লোকসানি শাখা ৭৪টি। ২০১৫ সালের জুনে ব্যাংকটির লোকসানি শাখা ছিল ৭০টি। বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকে লোকসানি শাখা দাঁড়িয়েছে ৯৯টি। ২০১৫ সালের জুনে এই ব্যাংকটিতে লোকসানি শাখা ছিল ৬৬টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ ব্যাংকের মোট শাখা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭১৬টি। এ মধ্যে লোকসানি শাখার সংখ্যা ৬৪২টি। ২০১৫ সালের জুন শেষে এই ব্যাংকগুলোতে লোকসানি শাখা ছিল ২৮২টি। জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের মোট শাখা এখন ১ হাজার ২০৮টি। এর মধ্যে লোকসানি শাখা ২৯০টি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এই ব্যাংকটির লোকসানি শাখা ছিল ১২৪টি। ওই সময় আর্থিক সূচকের উন্নতির জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী লোকসানি শাখার সংখ্যা বছর শেষে ৩০টিতে নামিয়ে আনার কথা ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, অগ্রণী ব্যাংকে এখন মোট শাখা ৯৩২টি।
×