ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খোলসুন তৈরি করে আবুল হোসেনের জীবিকা চলে

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

খোলসুন তৈরি করে আবুল হোসেনের জীবিকা চলে

কালিদাস রায়, নাটোর ॥ গুরুদাসপুরের দাদুয়া গ্রামের আবুল হোসেনের বয়স এখন ৪৫ বছর। বয়সের ভারে তিনি আর আগের মতো কঠিন কাজ করতে পারেন না। সংসারের খরচ চালানোর দায়িত্ব তার উপরেই। তবে তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নন। ঘরের দাওয়ায় বসে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি মাছ ধরার চাঁই (খোলসুন) তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। বাঁশ ও তালের আঁশই তার কাছে জীবিকা নির্বাহের অন্যতম হাতিয়ার। মাছ ধরার জন্য এসব চাঁই বাজারে বিক্রি করে যা আয় করেন, তা দিয়ে চলে তার সংসার। বছর পাঁচেক আগে শুধু নিজের ব্যবহারের জন্য তিনি এগুলো তৈরি করতেন। কিন্তু হালে বাজারে চাঁইয়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সংসারের ভরণপোষণ যোগান দিতে আবুল হোসেনের কাছে চাঁই শিল্পের গুরুত্ব বেড়েছে। শুধু আবুল হোসেন নয় গুরুদাসপুরে বিলাঞ্চলের বহু মানুষের জীবনের একই দৃশ্যের দেখা মেলে। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, গুরদাসপুরের চাঁচকৈড় হাট, নয়াবাজারসহ বিলাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবার মাছ ধরার অন্যতম দেশী ফাঁদ চাঁই শিল্পের সঙ্গে জড়িত। জীবিকার তাগিদেই এই শিল্পকে বুকে আগলে রেখেছে তারা। অন্যের মজুরি খাটলেও তাদের কাছে চাঁই শিল্পের গুরুত্ব কম নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই শিল্প সংসারের বাড়তি আয়ের যোগান দেয়। অন্য কাজের চাইতে চাঁইয়ের কাজই তাদের কাছে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের। স্বল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এখন বহাল তবিয়তে টিকে আছে বাঁশ ও তালের আঁশ দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি গ্রামীণ শিল্পটি। খাল-বিল, হাওড়, নদীতে মাছ ধরার কাজে চাঁই ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
×