ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ধ্বংস ও বেদখল হচ্ছে ইতিহাসের সাক্ষী জিনজিরা প্রাসাদ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

ধ্বংস ও বেদখল হচ্ছে ইতিহাসের সাক্ষী জিনজিরা প্রাসাদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ১৮ নবেম্বর ॥ শায়েস্তাখান পরবর্তী অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী ‘জিনজিরা প্রাসাদ’। ঢাকার কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় অবস্থিত ইতিহাসের বেদনাবিধুর ঘটনারও সাক্ষী এটি। কিন্তু অযতœ ও সংরক্ষণের অভাবে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে এ প্রাসাদ। ধ্বংস হতে চলেছে এর আদি রূপ। পৃথকভাবে সামান্য অংশ পরিত্যক্ত থেকেই জানান দিচ্ছে তার অবস্থান। প্রাসাদ এলাকায় গড়ে উঠেছে বাড়িঘর ও দোকানপাট। তাই এখন একেবারে কাছে না গেলে এর অস্তিত্ব বোঝা দায়। এর একটি অংশ তিনতলা সমান উঁচু। কেউ কেউ এটিকে ফাঁসির মঞ্চ আবার কেউ সিঁড়িঘর বলে। স্থাপনার ভেতরে-বাইরে আবর্জনার ভাগাড়। দীর্ঘদিনের অব্যবহার ও অযতœ-অবহেলার কারণে গাছের শিকড় জড়িয়ে ফেলেছে দেয়ালগুলোকে। দেয়াল ও ছাদে জন্মেছে বড় বড় বটবৃক্ষ ও অন্যান্য গাছপালা। গোড়া থেকে ছাদ পর্যন্ত দেখা দিয়েছে একাধিক ফাটল। স্থানীয় ইমদাদ হোসেন জানান, প্রাসাদের জায়গা বেদখলের শিকার হয়েছে। দেড় যুগের কিছু আগে তিনটি পৃথক অংশে বিভক্ত হয়ে প্রাসাদটির বেশকিছু অংশ টিকে ছিল। কিন্তু বেশিরভাগ স্থাপনা ভেঙ্গে সেখানে নতুন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। তবে এ প্রাসাদটির ধ্বংসের শুরু পাকিস্তান আমল থেকে। স্বাধীনতার পর এ এলাকায় মানুষের বসতি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে এর বাইরের দেয়াল এবং পরে মূল প্রাসাদের দেয়াল ভেঙ্গে স্থানীয়রা বাড়িঘর ও দোকানপাট নির্মাণ করে। আগে চাইলে এটিকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব ছিল। ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলার মুঘল সুবেদার দ্বিতীয় ইব্রাহিম খান ১৭ শতকের দিকে জিনজিরা প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। এর চারপাশে খনন করা হয়েছিল পরিখা। বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে তৈরি করা হয় প্রাসাদটি। নদীর ওপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে কাটারার কাছেই ঢাকা শহরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা হয়। প্রাসাদটি তখন নদীবেষ্টিত ছিল। এ কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছিল দ্বীপের প্রাসাদ। বাংলার ইতিহাসের অনেক বিয়োগান্তক ও বেদনাবিধুর ঘটনারও সাক্ষী এ প্রাসাদ।
×