ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২৭.৬৬ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ৬ নভেম্বর ২০১৬

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২৭.৬৬ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে দেশের দুই পুঁজিবাজারে লেনদেন কিছুটা কমলেও সব ধরনের সূচকই কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের তিন দিনই সূচক বেড়েছে। বাকি দুদিনই সূচক কমেছে। আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের প্রথম দুদিনই উভয় বাজারে সূচক কিছুটা কমেছিল। কিন্তু শেষ তিন দিনে সূচকের উর্ধমুখী প্রবণতা ফিরে আসে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কিছুদিন ধরেই বাজারে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। তবে চলতি সপ্তাহের শুরুতে কিছুটা শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার থেকেই শেয়ার বিক্রির আদেশ কিছুটা বাড়তে থাকে। ফলে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা ফিরে আসতে থাকে। সার্বিকভাবেই পুরো সপ্তাহেও উর্ধমুখী প্রবণতা বজায় থাকে। এ বিষয়ে মার্চেন্ট ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তারা জানান, মাঝে মাঝে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা তুলে নেয়ার ঝোঁক বিরাজ করে। আবার শেয়ারের দাম কমে গেলে অনেক সময় কেনার আদেশ বাড়তে থাকে। ফলে সূচক বাড়তে থাকে। এভাবে সূচকের ওঠানামা চলতে থাকে। তাই কোন উত্থান-পতনই দীর্ঘ মেয়াদী পতন নয়, কেননা সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নানামুখী উদ্যোগে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। পাশাপাশি জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলো শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানের ঘোষণা দিচ্ছে। যা পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে সহায়তা করছে। এছাড়া কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে শেয়ারের দর তাই। তাই বিনিয়োগকারীদের কোন প্রকার গুজবে কান না দিয়ে জেনে বুঝে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, আগের দুই সপ্তাহের পতনের ধারাবাহিকতায় লেনদেন শুরু হয়েছিল। কিন্তু মূলত বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার নীতির কারণেই সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা ছিল। কিন্তু শেষ তিন দিনে বিনিয়োগকারীদের মুনাফার তোলার প্রবণতা কমে যায়। ফলে সূচকের উর্ধগতি ফিরে আসে। ফলে পুরো সপ্তাহে সব ধরনের সূচকই কিছুটা বেড়েছিল। পুরো সপ্তাহে লেনদেনে জ্বালানি এবং শক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর প্রাধান্য ছিল। খাতটির মোট লেনদেনের ১৬.২ শতাংশ দখল করেছে কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে খাতটির ডরিন পাওয়ার এবং মবিল যমুনা বিডি এই ক্ষেত্রে এগিয়ে ছিল। প্রকৌশল খাতটি ১৫.৫০ শতাংশ দখল করে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে। সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সপ্তাহজুড়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক বাড়লেও লেনদেন কমেছে। আলোচ্য সপ্তাহে লেনদেন কমার হার ২৭.৬৬ শতাংশ। গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে সেখানে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ১৯ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৮৩৬শ’ কোটি টাকা। ডিএসইর সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩৬.৬৪ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই৩০ সূচক বেড়েছে ৬.৩৬ পয়েন্ট বা .৩৬ শতাংশ। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ৮ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। এদিকে ডিএসইতে পুরো সপ্তাহে ডিএসইতে সার্বিক সূচক বাড়ার কারণে পিই রেশিও কিছুটা বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৩০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৫টি কোম্পানির, কমেছে ১২৫টি কোম্পানির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি কোম্পানির এবং ২টি কোম্পানির কোন লেনদেন হয়নি। আর সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবারে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার কোটি টাকা। ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ডরিন পাওয়ার, মবিল যমুনা বিডি, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক, ফরচুন সুজ, আর্গন ডেনিমস, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, স্কয়ার ফার্মা, শাশা ডেনিমস ও মিথুন নিটিং। দরবৃদ্ধির শীর্ষের কোম্পানিগুলো হলো : পেনিনসুলা চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, গোল্ডেন হার্ভেস্ট আগ্রো, কনফিডেন্ট সিমেন্ট, আইসিবি, ফাস ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফিড, ন্যাশনাল পলিমার ও সালভো কেমিক্যাল। দর হারানোর শীর্ষের কোম্পানিগুলো হলো : লিগ্যাসি ফুটওয়ার, সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, মেট্রো স্পিনার্স, গোল্ডেন সন, জেএমআই সিরিঞ্জ, ন্যাশনাল টিউবস, ঝিল বাংলা সুগার, ইভিন্স টেক্সটাইল ও এপেক্স ফুডস।
×