ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নজরুল ইনস্টিটিউটের নতুন ভবনের নক্সা উপস্থাপন

মিরাজের পরিবারের জন্য পাকা বাড়ি করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৩ নভেম্বর ২০১৬

মিরাজের পরিবারের জন্য পাকা বাড়ি করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ‘বিস্ময় বালক’ ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে খুলনার স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। বাড়ি তৈরির উপযুক্ত জমি খুঁজে পেলেই এই তরুণ তারকার পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জনকণ্ঠকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা তাঁর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ খুলনার জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় প্রশাসন। দরিদ্র রেন্ট এ কার চালকের পুত্র মেহেদী হাসান মিরাজ এখন বড় তারকা। টেস্ট সিরিজে ১৯ ইউকেট নিয়ে একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে। নিজের পারফরম্যান্স দিয়েই তিনি নাম ছড়িয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে। কিন্তু এত কিছুর পরও খুলনার খালিশপুরের দক্ষিণ কাশিপুর এলাকায় ছোট্ট ভাড়া বাড়িটায় তার বাস, সেখানেই মা-বাবা আর ছোট বোনকে নিয়ে সাজানো সংসার। খালিশপুরে টিনের চালের সেই বাড়িতে সুখ থাকলেও হয়ত স্বাচ্ছন্দ্য নেই। যে টিনের বাসায় মিরাজরা থাকেন, সেখানে ঘর মাত্র দুটি। বাঁশের চাটাই দিয়ে বারান্দার একটি অংশ ঢেকে তৈরি হয়েছে আরেকটি ঘর। ওই বাসায় ঢোকার গলি এতই সরু যে সেখানে রিক্সা যেতে পারে না। মিরাজকে শুভেচ্ছা জানাতে হঠাৎ অতিথি বেড়ে যাওয়ায় তাদের বসার ব্যবস্থা হয়েছে রাস্তার পাশে চেয়ার পেতে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব খবর দেখে দেশকে এত বড় গৌরব এনে দিলেন যিনি, তার ও তার পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। বাড়ি তৈরির উপযুক্ত জমি খুঁজে পাওয়া গেলেই এই তরুণ তারকার পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। অভিষেকেই তারকা খ্যাতি পাওয়া ক্রিকেটার মিরাজের বাবা জালাল হোসেন রেন্ট-এ কারের মাইক্রোবাস চালক। তার ছোট মেয়ে একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ছে। আর ছেলে মিরাজ উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে এ বছরই। খুলনার ছেলে ১৯ বছর বয়সী স্পিনার মিরাজ ইংল্যান্ডের সঙ্গে সদ্য সমাপ্ত দুই-ম্যাচের রকেট টেস্ট সিরিজ বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পুত্র মিরাজ তার অভিষেক টেস্ট ম্যাচে ১৯টি ইংলিশ উইকেট লাভ করেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ৭টি এবং দ্বিতীয় টেস্টে ১২টি উইকেট লাভ করেন নতুন তারকা ক্রিকেটার মিরাজ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে নজরুল ইনস্টিটিউটের নতুন ভবনের নক্সা ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বুধবার নজরুল ইনস্টিটিউটের নতুন ভবন নির্মাণের প্রস্তাবিত নক্সা উপস্থাপন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধবী হলে স্থপতি ইকবাল হাবিব ও ইশতিয়াক জহির পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে নতুন ভবনের নানা দিক প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ইমেরিটাস ড. রফিকুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ। পরে ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে প্রস্তাবিত ৮ তলা ভবনের নানা বৈশিষ্ট্য ও সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়। স্থপতি ইকবাল হাবিব জানান, ধানম-ির পুরাতন ২৮ নম্বরের ৩৩০বি’তে বিদ্যমান পাঁচ তলা ভবনটি ৬ তলায় উন্নীত করা হবে। বিদ্যমান ভবনের পাশাপাশি আরেকটি নতুন ৮ তলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কমপ্লেক্স ভবনের সামনে উন্মুক্ত স্থান ও মঞ্চ থাকবে। যেটি ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরের আদলে তৈরি করা হবে। প্রফেসর ইমেরিটাস ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর কবি নজরুল ইসলামকে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেন। কবির চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির জন্মভিটা পরিদর্শনের স্মৃতিচারণ করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চুরুলিয়ায় জাতীয় কবির বাড়িতে যান। শেখ হাসিনাই প্রথম কোন সরকার প্রধান যিনি কবি নজরুলের জন্মস্থান চুরুলিয়ার বাড়িতে গিয়েছেন।
×