ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী বছরের শুরুতেই নির্মাণ আরম্ভ

দেশের প্রথম সিলিকন সিটি হচ্ছে রাজশাহীতে- ‘বরেন্দ্র সিলিকন সিটি’

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১ নভেম্বর ২০১৬

দেশের প্রথম সিলিকন সিটি হচ্ছে রাজশাহীতে- ‘বরেন্দ্র সিলিকন সিটি’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের প্রথম সিলিকন সিটি নির্মাণ হচ্ছে রাজশাহীতে। আগামী বছরের শুরুতেই ‘বরেন্দ্র সিলিকন সিটি’ নামের এ প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে সিলিকন সিটির জন্য ৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ সিটিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চারতলা ভবন নির্মাণ ও প্রশিক্ষণের জন্য দশতলা টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। বরেন্দ্র সিলিকন সিটি নির্মাণ শেষ হলে ১৪ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যে সারাদেশে স্কুল কলেজে ১০ হাজার ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের। বর্তমানে প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে ক্লাস করছে। অনেক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজেও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম তৈরি করা হয়েছে। এখন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কলেজগুলোতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের পাশাপাশি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করার। ভবিষ্যত প্রজন্মকে দক্ষ ও উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপনের প্রকল্পের আওতায় এ কাজ করা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে আইটি খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে সরকার সবকিছু করবে। দেশের সাত বিভাগে সাতটি আইসিটি পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা শহরেও ছোট আকারে আইসিটি পার্ক স্থাপন করা হবে। আইসিটি পার্ক দক্ষ ও উপযুক্ত প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিকাশে জেলায় জেলায় আইসিটি পার্ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় আইসিটি পার্ক নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে রয়েছে- সিলেটে ইলেকট্রনিক সিটি, মহাখালীতে আইটি ভিলেজ, রাজশাহী আইটি ভিলেজ, কাওরানবাজারে জনতা টাওয়ার সফটওয়ার টেকনোলজি পার্ক, যশোর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক, নাটোর প্রিল্যান্সার ইনস্টিটিউট। তথ্যপ্রযুক্তি সেবার মান বাড়ানোর ওপর সরকার আরও গুরুত্ব দিয়েছে। আইসিটি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশ পুরোপুরি আইসিটিনির্ভর হিসেবে গড়ে উঠবে। বিসিএসআইআরের ডাটাবেজ প্রস্তুত এবং তথ্যপ্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়করণ শীর্ষক কর্মসসূচীর আওতায় বৈজ্ঞানিক ডাটাবেজ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ডাটাবেজ, ফিন্যান্সিয়াল ডাটাবেজ, লাইব্রেরি ডাটাবেজ ও মেডিক্যাল ডাটাবেজের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এ সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। বিভাগীয় পর্যায়ে আইটি ভিলেজ স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই করে এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার টেকনোলজি পার্ক বা আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পের অনেকটিতে কনসালটেন্ট নিয়োগও করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্য শুনে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করে। আমেরিকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। তারা বাংলাদেশে আইসিটি পার্কে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি এবং আমেরিকান এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারের (এএবিইএ) মধ্যে একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। এ দুটি সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী দেশের সাইবার প্রতিরক্ষা, ডাটা সেন্টার, কল সেন্টার এবং আউটসোর্সিং- এ চারটি বিষয়ে সহযোগিতার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। বাংলাদেশের আইসিটি সেক্টরে স্টার্ট-আপ প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য জিএপি, বিসিসি ও বেসিসের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তির মাধ্যমে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে আরও উন্নয়ন করা হবে। জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। প্রযুক্তিবান্ধব এ সরকার তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি রাজশাহীর জিয়ানগরে আগামী বছরের শুরুতেই বরেন্দ্র সিলিকন সিটির নির্মাণ কাজ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে দেশে কোন সিলিকন সিটির ঘোষণা দেয়া হয়নি। এজন্য ৪৬ কোটি টাকাও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখন দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে। সিলিকন সিটির প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চারতলা ভবন ও প্রশিক্ষণের জন্য দশতলা টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। বরেন্দ্র সিলিকন সিটির কাজ শুরু হলে এখান থেকে ১৪ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
×