ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

দৃঢ় প্রত্যয়ী হাজারো নেতাকর্মীদের ঢল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

প্রকাশিত: ০১:৪৮, ২২ অক্টোবর ২০১৬

দৃঢ় প্রত্যয়ী হাজারো নেতাকর্মীদের ঢল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে

অনলাইন ডেস্ক ॥ কন্ঠে জয়বাংলা স্লোগান, হাতে জাতীয় পতাকা, আর বুকে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে আজ হাজার হাজার নেতাকর্মী, কাউন্সিলর ও ডেলিগেট সমবেত হয় ঐতিহাসিক সেহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনস্থলে। ভোরের আলো ফোটার পরপরই মিছিল শোভাযাত্রা নিয়ে সম্মেলন স্থলের দিকে আসতে থাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দলের নেতাকর্মী ছাড়াও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছে দল-মত নির্বিশেষে অসংখ মানুষ। বাসসের খবরে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে পুরো ঢাকা উৎসবের নগরীতে পরিনত হয়। নগরীর আনাচে কানাচে থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সোহরাওয়ার্দীতে আসেন। সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সম্মেলন উপলক্ষে নেয়া নিরাপত্তার কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগতদের নিরাপত্তা তল্লাশী শেষে সবাইকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। একেকজনকে নিরাপত্তাকর্মীরা কমপক্ষে তিন জায়গায় তল্লাশী করলেও কারো মুখে সামান্যতম বিরক্তির চিহ্নও দেখা যায়নি, সবার চোখেমুখে ছিল উৎসবের আমেজ। তল্লাশীর ক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তা করতে দেখা গেছে সম্মেলনে আগতদের। সারিবদ্ধ হয়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্মেলনে প্রবেশ করেন আমন্ত্রিত অতিথি ও নেতাকর্মীরা। তবে কাউকে ব্যাগ বা অন্য কোন ভারী বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর অঙুলী নির্দেশনায় সমগ্র জাতি সেদিন মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেদিন যেমনিভাবে হাজারো মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্ঠে মুক্তির মন্ত্র শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন, এমনই দৃশ্য আজ স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও লক্ষ্য করা গেছে। মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনস্থলে আসবেন সকাল ১০টায়। কানায় কানায় পূর্ণ সমাবেশ, পিন পতন নিরবতা, অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন হাজারো জনতা। ঘড়ির কাটায় ঠিক ১০টা বাজার সাথে সাথে সম্মেলনস্থলে পৌঁছালেন শেখ হাসিনা। মুহুর্মুহ করতালি আর গগণবিধারী শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে গোটা সম্মেলনস্থল। একাত্তরের ৭ মার্চ আর আজকের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেদিন জাতির পিতার কন্ঠে মুক্তির মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে বাঙালি সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। আজ লাখ জনতা বঙ্গবন্ধু কন্যার কাছ থেকে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলার দীক্ষা নিয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। তারা শুনেছেন জঙ্গি, সন্ত্রাস দমনের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের সত্য গল্প। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশ কিভাবে মধ্যম আয়ের থেকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিশ্বের বুকে কিভাবে সম্মানের সাথে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত এই বাংলাদেশ। নৌকা দিয়ে বানানো রিক্সা ৫দিন চালিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা এসেছেন নুরু মিয়া। সম্মেলনস্থলের পাশেই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে দেখা হয় তার সাথে। তিনি বাসসকে বলেন, জীবনের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে ২৬ হাজার টাকায় তিনি এই নৌকা দিয়ে রিক্সা বানিয়েছি। তবু এখন শান্তি লাগছে সম্মেলনে আসতে পেরে। কক্সবাজারের কাউন্সিলর কাবেরী সারোয়ার বলেন, দলীয় প্রধানের বার্তা নিয়ে গিয়ে আমরা এলাকার উন্নয়নে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরো দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করার শপথ নিয়েছি আজকের সম্মেলন থেকে। বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। এই দলের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা নিয়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে আমরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করবো।
×