ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি

চলতি সপ্তাহেই দেড় কোটি ডলার ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৭ অক্টোবর ২০১৬

চলতি সপ্তাহেই দেড় কোটি ডলার ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের ১ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার (১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন) ডলার ফেরত পাওয়ার বিষয়টি আগেই নিশ্চিত হয়েছে। ফিলিপাইনের রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাজেয়াফতকৃত এ অর্থ বাংলাদেশের অনুকূলে অবমুক্ত করার আদেশ জারি করেছেন। তবে এ অর্থ কোন প্রক্রিয়ায় ফিলিপাইন সরকার বাংলাদেশকে ফেরত দেবে সে বিষয়ে ঐদিন কোন সিদ্ধান্ত দেননি। এ কারণে অর্থ ফেরত পেতে বিলম্ব হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাজেয়াফতকৃত এ অর্থ বর্তমানে ফিলিপাইনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রক্ষিত রয়েছে। এ অর্থের মালিকানা বাংলাদেশের, এটি নিশ্চিত হলেও এখন আদালতের রিকুইজিশন অর্ডারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। রিকুইজিশন অর্ডার হচ্ছে, কোন প্রক্রিয়ায় এ অর্থ ফেরত দেবে সে সংক্রান্ত আদালতের আদেশনামা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভাগের (বিএফআইইউ) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, চুরি যাওয়া রিজার্ভের দেড় কোটি ডলার ফেরত পাওয়ার বিষয়ে দু’একদিনের মধ্যেই ঐ দেশের আদালতের রিকুইজিশন অর্ডার পাওয়া যাবে। রিকুইজিশন অর্ডারের বলে দেয়া হবে, এই অর্থ কোন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে ফেরত দেবে ফিলিপাইন। তিনি বলেন, ফিলিপাইনের আইনে যে অর্থদ- দেয়া হয়, সেই অর্থ কোন প্রক্রিয়ায় পরিশোধ করতে হবে সেটির সিদ্ধান্তও দেন আদালত। জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া রিজার্ভের যে অর্থ ফিলিপাইনে উদ্ধার হয়েছে সেটি নগদ হওয়ায় ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়াটাও সহজ হবে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের যে এ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেই এ্যাকাউন্টে এই অর্থ স্থানান্তর করার নির্দেশনা দিতে পারে আদালত। এটি না হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ সংক্রান্ত পৃথক কোন এ্যাকাউন্ট খুলেও এই অর্থ স্থানান্তরের নির্দেশনা দেয়া হতে পারে। গেল ১৯ সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনের রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্ধার হওয়া রিজার্ভের (বাজেয়াফতকৃত) ১৫ দশমিক ২৫ মিলিয়ন বাংলাদেশের অনুকূলে অবমুক্ত করার আদেশ জারি করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে আদালতে প্রতিনিধিত্ব করে সে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস (ডিওজে)। চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব হতে মোট ৭০টি ভুয়া পেমেন্ট ইনস্ট্রাকশনের (পিআই) মাধ্যমে ১৯২ কোটি ৬ লাখ (১৯২৬ মিলিয়ন) ডলার অবৈধভাবে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে ৪টি পিআইয়ের বিপরীতে ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে (আরসিবিসি) সরিয়ে নেয়া হয় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২ কোটি ডলার সরিয়ে নেয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। ওই সময় আরসিবিসি ব্যাংকে যাওয়া টাকার একটি বড় অংশ ফিলিপাইনের জুয়ার টেবিলে চলে যায়। ফিলিপাইনের বিভিন্ন সংস্থা চুরি যাওয়া অর্থের কিছু অংশ নানাভাবে উদ্ধার করে।
×