ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাইবান্ধার জোড়ালাগা যমজ শিশু ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন চিকিৎসাব্যয় সরকার বহন করবে

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১৬ অক্টোবর ২০১৬

গাইবান্ধার জোড়ালাগা যমজ শিশু ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন চিকিৎসাব্যয় সরকার বহন করবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জোড়ালাগা দুটি মেয়ে শিশু। চার হাত, চার পা ও দুটি মাথা। মাথা ও কোমর জোড়া লাগানো। দুটি শিশুর প্রস্রাব-পায়খানার পথ একটি। শনিবার গাইবান্ধা থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) এমন দুটি নবজাতক যমজকে আনা হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাদের। শনিবার এ জোড়ালাগা শিশু দুটিকে ঢাকা মেডিক্যালে দেখতে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সরকার এ শিশু দুটির চিকিৎসাব্যয় বহন করবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন ইউনিয়নের রাজু মিয়ার স্ত্রী শহীদা বেগম যমজ শিশু দুটির জন্ম দেন। জন্মের সময়ই তারা ছিল জোড়ালাগা। পরে এলাকার চেয়ারম্যান ও অন্যান্যের পরামর্শে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) আনা হয়। শনিবার সকালে দহবন ইউনিয়ন থেকে নবজাতকদের মা শহীদা বেগম ও বাবা রাজু মিয়া তাদের ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন। বর্তমানে তাদের ঢামেকের পুরনো ভবনের দোতলার নবজাতক ওয়ার্ডের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। শিশুদের দু’জন দু’মুখেই কাঁদছে, চার হাত-পা নাড়াচ্ছে, তবে তাদের কোমর ও মাথা জোড়ালাগা। অবশ্য তাদের প্রস্রাব-পায়খানার পথ একটি। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসকরাও দেখে গেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ জোড়ালাগা যমজ শিশু দুটির পিতা রাজু মিয়া জানান, ছয় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। তাদের চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে, নাম শাহজাদ। দুটি জোড়ালাগা মেয়েশিশুর মধ্যে একটার মুখ ভাইয়ের (ছেলে শাহজাদ) মতো, আরেকটা আমার মতো। এদিকে দুই মাথা, চার হাত ও চার পায়ের একটি জোড়ালাগা (পাইগোপেগাস) মেয়ে। শিশু দুটির চিকিৎসার সকল খরচ বহন করবে সরকার। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যালে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ কথা জানিয়েছেন। দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ঢাকা মেডিক্যালের চিকিৎসাসেবা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শনে গেলে শিশু দুটির বাবা-মা ও ডাক্তাররা শিশুর বিষয়ে মন্ত্রীকে অবহিত করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এ জোড়া শিশুদের চিকিৎসার সকল ব্যয় সরকার বহন করবে বলে ঘোষণা দেন। শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ সাহানূর ইসলাম জানান, বর্তমানে যমজ শিশুটি শিশু সার্জারি বিভাগের ২০৫ নম্বর ওয়ার্ডে আছে। বয়স ১৮ দিন। যমজ শিশু দুটোর গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। স্বাভাবিকভাবে বাড়িতে জন্ম নিয়েছে এ জোড়ালাগা যমজ শিশু। এ সময় জোড়া শিশুর চিকিৎসার বিষয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমি ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ জোড়া শিশু অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করতে হবে এবং তা করা সম্ভব। তার চিকিৎসার সকল ব্যয় সরকার বহন করবে।
×