ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টুটুল মাহফুজ

বিয়ে আপনার দায়িত্ব প্ল্যানারের

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ৩ অক্টোবর ২০১৬

বিয়ে আপনার দায়িত্ব প্ল্যানারের

বিশাল বড় হলরুম। পুরোটা পরিপাটি সাজানো। লাল, নীল আর সবুজ আলোয় মুখর চারদিক। গানের ধুমধাম শব্দ। কাউকে কিছু বলতে হলে কানের কাছে এসে বলতে হচ্ছে। এদিকে কনে ব্যস্ত একেবারে শেষ মুহূর্তের সাজগোজ নিয়ে। সঙ্গে তার কিছু বন্ধুবান্ধব। সবাই ব্যস্ত সাজগোজ নিয়ে। চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান। সবকিছুই পরিপাটি করে সাজানো। নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগেই সবকিছু তৈরি হয়ে গেছে, ফুল এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে বর-কনে বসার স্টেজ। অতিথিদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এই অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ওয়েডিং প্ল্যানারদের। বছর দশেক আগে বাংলাদেশে এই প্ল্যানাররা কাজ শুরু করেন। কিন্তু এখন তাদের কাজের পরিধি বেড়েছে অনেক। রীতিমতো এটি এখন একটি শিল্প। এরই মধ্যে কনের সাজ শেষ। বর্তমান সময়ে শহরের প্রায় প্রতিটি মেয়েরই ইচ্ছা থাকে তার বিয়ে হবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে। এবং স্বনামধন্য কোন ওয়েডিং প্ল্যানার করবে তার যাবতীয় আয়োজন। যেমন বিয়ে সাজ, স্টেজ কেমন হবে, অতিথিদের কেমন আপ্যায়ন করা হবে এমন যাবতীয় কিছু। বাংলাদেশে এ ধরনের ওয়েডিং প্ল্যানার ফার্ম আছে অন্তত ২০টির বেশি। যারা বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজটি করছে। এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে করছেন অনেকে। সে রকম একটি ওয়েডিং প্ল্যানারদের মধ্যে রয়েছে এ্যালিগ্যান্ট ইভেন্ট সলিউশন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান রাজিয়া হক কনক জানিয়েছেন, ‘নাগরিক জীবনে আজকাল মানুষের ব্যস্ততার শেষ নেই। বিয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও মানুষ আজকাল সময় দিতে পারে না।বিয়ের জন্য দরকার বিশেষ আয়োজন। দরকার প্রস্তুতি। যা দুই-একদিনে এসব কর্মব্যস্ত মানুষের পক্ষে সঠিকভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। তাই গত বেশ কয়েক বছর ধরেই তারা শরণাপন্ন হচ্ছেন ওয়েডিং প্ল্যানারদের কাছে’। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এটি এখন আর আগের মতো নেই। ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। অনেক হারানো সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। যেমন রিক্সা পেইন্ট। এছাড়া প্রতিটি বিয়ের আয়োজনে রঙের ব্যাপক কাজ থাকে। প্রতিটি বিয়ের প্ল্যান করা হয় রং, বাজেট এবং ক্লাইন্টের পছন্দের ওপর ভিত্তি করে। শুধু তাই নয়, বর এবং কনের পোশাকের ওপর ভিত্তি করে করা হয় পুরো স্টেজের ডেকোরেশন। সাধারণত গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানগুলো হয় একটু বেশি কালারফুল। বর্তমানে হলুদের অনুষ্ঠানেও ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন থিম। যেমন ট্র্যাডিশনাল থিম, রিক্সা পেইন্ট থিম বা মাল্টি কালার থিম। এখানে ফুলের কাজও থাকে অনেক বেশি। যেমন আজকাল তাজা ফুলের পাশাপাশি কৃত্তিম ফুল এবং হাতে তৈরি কাগজের ফুলের ব্যবহার হচ্ছে। মোট কথা সবকিছুর সমন্বয়ে সময় এবং পরিবেশের উপযোগী করে বিশেষ দিনটি আরও বেশি বিশেষ করে তোলা হয়। আয়োজন ভেদে পুরো অনুষ্ঠানের বাজেট নির্ভর করে। সাধারণত বর-কনের একটি স্টেজের খরচ ১০ হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত হয়। আর আজকাল বরও গতানুগতিকভাবে গাড়িতে চড়েই আসছেন না। বর কখনও আসছেন টমটম গাড়িতে আবার কখনও বা হাতির পিঠে চড়ে। কনের মতো এলে বরও চান তার বিশেষ এই দিনটি আরও বেশি বিশেষ হয়ে উঠুক। এরই মধ্যে চলে এসেছে বরপক্ষ। আর পরিকল্পনামাফিক কনেপক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। সবার ভেতর আনন্দ বিরাজ করছে। কারও তেমন বিশেষ চিন্তা নেই, কারণ টাকা একটু বেশি খরচ হলেও একদিকে চাপমুক্ত হয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান যেমন তারা আনন্দ উপভোগ করছেন তেমনি আয়োজনও চলছে পরিকল্পনামতো। ছবি : এ্যালিগ্যান্ট ইভেন্ট সলিউশন
×