ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিও হিসাব খোলার প্রবণতা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৩ অক্টোবর ২০১৬

বিও হিসাব খোলার প্রবণতা বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বেশ কিছুদিন পর পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় আবারও বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, যার প্রতিফলন দেখা যায় সম্প্রতি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতায়। গত ১৫ দিনে বিও এ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে তিন হাজারের বেশি। ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, কিছুদিন আগেও বিও এ্যাকাউন্ট খোলার প্রবণতা থমকে গিয়েছিল। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর এই বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ভাটা পড়ে। ফলে বাজার ছাড়তে শুরু করেন বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে থমকে যায় বিও এ্যাকাউন্ট খোলার হার। কোন কোন হাউসে দিনে একটিও বিও এ্যাকাউন্ট খোলা হয়নি, এমন নজির রয়েছে। এরপর ২০১২ সাল থেকে ধীরে ধীরে বিও এ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে এখন বাজার ভাল থাকায় আবারও এ্যাকাউন্ট খোলার পরিমাণ বাড়ছে। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী এ প্রসঙ্গে বলেন, পুঁজিবাজার ভাল না হলে এখানে বিনিয়োগকারী আসবেন না। এটা খুবই স্বাভাবিক। এখন পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন এটা পুঁজিবাজারের ভাল লক্ষণ। আর তা দেখে পুরনো বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও পুঁজিবাজারে ফিরে আসছেন। সিডিবিএলের দেয়া তথ্যমতে, বর্তমানে মোট বিও এ্যাকাউন্ট রয়েছে ২৯ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪টি। ১৫ দিন আগে এ সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ নয় হাজার ২৪৩টি। অর্থাৎ ১৫ দিনের ব্যবধানে বিও এ্যাকাউন্ট বেড়েছে তিন হাজারের বেশি। বর্তমানে যে বিও এ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার মধ্যে পুরুষ এ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ২১ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৮। অন্যদিকে নারী বিও এ্যাকাউন্টধারী রয়েছেন সাত লাখ ৮৮ হাজার ৭৯টি। আর কোম্পানির বিও রয়েছে ১০ হাজার ৭৩৭টি। এর আগে সময়মতো বিও ফি না দেয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দুই লাখের বেশি এ্যাকাউন্ট। সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রধানত দুই কারণে এবার বেশি এ্যাকাউন্ট বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে বাজারের মন্দা পরিস্থিতি, অন্যটি প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের সুবিধা না পাওয়া। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা ৫০০ টাকা দিয়ে বিও নবায়ন করেননি। এসব এ্যাকাউন্ট বাতিল হয়ে গেছে। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা-২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি দিয়ে হিসাব নবায়ন করতে হয়। এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসেবে প্রতি বছর ডিসেম্বরে এ ফি জমা নেয়া হতো। তবে ২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি দেয়ার সময় জুন মাস নির্ধারণ করে। এ সময়ে বিও নবায়ন ফি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসইসির জারি করা এক সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও হিসাব নবায়নে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। নবায়ন না করা হলে এ্যাকাউন্ট বাতিল করা হবে বলেও ওই সার্কুলারে বলা হয়েছিল।
×