ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রায় দুই মাস পর ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিস খুলছে আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রায় দুই মাস পর ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিস খুলছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরাপত্তার অজুহাতে বন্ধের প্রায় দুই মাস পর অবশেষে আজ বাংলাদেশে আবার শুরু হচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম। রবিবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছে- সোমবার থেকে বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সকল অফিস খোলা থাকবে। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ব্রিটিশ কাউন্সিলের যত কার্যক্রম ও পরিষেবা আছে সেসবও পুনরায় শুরু হচ্ছে। বিবিধ সংস্কার কাজের জন্য সাময়িক বন্ধের পর চট্টগ্রাম, সিলেট ও ঢাকা কার্যালয়ে সকলকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এর আগে গত ২৭ জুলাই নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশে কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়- নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশে সাময়িকভাবে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সব অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুকূলে থাকা সাপেক্ষে শীঘ্রই আবার সব কার্যক্রম চালু করা হবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল রয়্যাল চার্টার পরিচালিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা। আন্তর্জাতিক এ সংস্থা শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরিতে ভূমিকা রাখে। পৃথিবীর ১০০টিরও বেশি দেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব দেশে সংস্থাটির আট হাজার কর্মী ও কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে দুই হাজার শিক্ষক ইংরেজী শিক্ষা, বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে যোগাযোগ এবং শিক্ষা ও সামাজিক যোগাযোগ নিয়ে সারাবিশ্বের হাজার হাজার পেশাদার মানুষ, নীতি-নির্ধারক ও তরুণদের সঙ্গে কাজ করছেন। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে হঠাৎ বন্ধের পর ৩১ জুলাই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে জনকণ্ঠ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবেদনের নানা তথ্য বেরিয়ে পড়ায় সমালোচনায় পড়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনও। ‘ব্রিটিশ কাউন্সিল সামায়িক বন্ধের ঘোষণা/অন্যায় সিদ্ধান্ত’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে উঠে আসে বিশ্বের বহু দেশে দফায় দফায় জঙ্গী হামলার পরও সেখানে অব্যাহত রাখা হয়েছে কার্যক্রম। অথচ বাংলাদেশে একটি জঙ্গী হামলার পরই ব্রিটিশ কাউন্সিল কার্যক্রম স্থগিত করে। দেখা গেছে, জঙ্গীকবলিত পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, লেবাননসহ অন্যান্য দেশে কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চালু আছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১১০ দেশে প্রায় একই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির অফিস আছে ১৯১। জঙ্গী হামলার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সকল অফিস বন্ধ করে কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটেই দেখা গেছে, বিশ্বের জঙ্গীকবলিত দেশগুলোতে ঠিকই তারা চালিয়ে যাচ্ছে কার্যক্রম। বিশ্বের যেসব দেশে প্রায় প্রতিদিন জঙ্গী হামলায় অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে, যেসব দেশ আন্তর্জাতিক জঙ্গীদের রীতিমতো আস্তানায় পরিনত হয়েছেÑ সেখানেও কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। সিরিয়া ছাড়া সকল দেশেই কার্যক্রম চলছে প্রতিষ্ঠানটির। জঙ্গীকবলিত পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরাক, লেবাননসহ অন্যান্য দেশে চলছে কাজ। আফগানিস্তানের কাবুলে অফিস ব্রিটিশ কাউন্সিলের। পাকিস্তানে পাঁচটি প্রদেশে অফিস আছে প্রতিষ্ঠানটির। ইসলামাবাদ, করাচী, লাহোর, মুলতান, ফয়সালাবাদে অফিস খুলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। কার্যক্রম চলছে জঙ্গী হামলা ও যুদ্ধকবলিত ইরাক, লেবানন, মিসর, জর্দান, তুরস্কসহ অন্যান্য দেশে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছেÑ জঙ্গীবাদীদের কারণে যেখানে প্রতিদিন মানুষ মরছে, যেখানে বোমা হামলা, গেনেড হামলা নিয়মে পরিণত হয়েছে, সেখানে যদি কার্যক্রম চলতে পারে তাহলে বাংলাদেশের বিষয়ে কেন এমন নেতিবাচক অবস্থান? এরপর ৮ আগস্ট সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ব্রিটিশ হাইকমিশনার এ্যালিসন ব্লেক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল শীঘ্রই খুলে দেয়া হচ্ছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের অনলাইন কার্যক্রম চলছে এবং খুব শীঘ্রই এটি খুলে দেয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ থেকে আবারও চালু হচ্ছে বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রম। ব্রিটিশ কাউন্সিল জানিয়েছে, পিয়ারসন এডএক্সেল এক্সামিনেশনস জানুয়ারি ২০১৭ সেশনের জন্য নিবন্ধন শুরু হয়েছে গত ২২ সেপ্টেম্বর। শেষ হবে ১৩ অক্টোবর। স্কুল থেকে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে তারা নিজ নিজ স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইউনিক স্কুল ক্যান্ডিডেট রেজিস্ট্রেশন লিংকে গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবে। প্রাইভেট ক্যান্ডিডেট যারা আছে তারা তাদের ওয়েবসাইটে (www.britishcouncil.org.bd) গিয়ে পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট এবং দিনাজপুরের সকল পরীক্ষার্থীদের জন্যই উক্ত সেবাটি দিয়ে যাবে ব্রিটিশ কাউন্সিল। কাউন্সিল আরও বলেছে- অক্টোবর ও নবেম্বরের আইইএলটিএসের তারিখগুলো এখন উন্মুক্ত। আইইএলটিএস প্রার্থীরা অনলাইনে (ielts.britishcouncil.org) এ লিঙ্কটির মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবে। ব্রিটিশ কাউন্সিল এর ইংরেজী ভাষা শিক্ষার চতুর্থ টার্ম শুরু হবে ১২ অক্টোবর থেকে। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে লেভেল টেস্টের জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। এজন্য তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও উত্তরা এবং চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ টিচিং সেন্টারগুলোতে ইংরেজী শিক্ষার কোর্সের জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। এছাড়াও ব্রিটিশ কাউন্সিলের সকল ব্যবসায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও কর্মশালা অব্যাহত থাকবে। কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে বন্ধ থাকার সময় ক্রমাগত সহায়তায় জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ সরকার, সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। ঢাবির ইংরেজী বিভাগের সঙ্গে কনফিডেন্স গ্রুপের চুক্তি ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সেন্টার ফর ইংলিশ টিচিং এ্যান্ড রিসার্চের (সিইটিআর) সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে কনফিডেন্স গ্রুপ। চুক্তির আওতায়Ñ বিজনেস কমিউনিকেশন স্কিলস ডেভেলপমেন্টের ওপর কনফিডেন্স গ্রুপের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেবে সিইটিআর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইটিআর কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষরকালে কনফিডেন্স গ্রুপের হেড অব গ্রুপ এইচআর এ্যান্ড কর্পোরেট কমিউনিকেশনস মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এবং সিইটিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের হয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. রুবিনা খান।
×