ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটের কবলে কোরবানির পশুর চামড়া

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটের কবলে কোরবানির পশুর চামড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মধ্যস্বত্বভোগীদের পর এবার ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে দেশের কোরবানির পশুর চামড়া। কোরবানির দশ দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া কেনার কোন আগ্রহ দেখাননি ট্যানারি মালিকরা। এ অবস্থায় শত কোটি টাকা মূল্যের লাখ লাখ পিস চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী এবং আড়ৎদাররা। ঈদের আগে ট্যানারি মালিকদের চামড়ার দর নির্ধারণ নিয়ে যে কারসাজি শুরু হয়েছিল, তা যেন থামছে না। বরং ঈদের পর তা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে এবার রেকর্ড পরিমাণ সাড়ে পাঁচ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহ হলেও এখনও কেনার জন্য ক্রেতা মিলছে না। চট্টগ্রামের দুটি ট্যানারি বন্ধ থাকায় ঢাকার মালিকদের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীলতার কথা জানান কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়ৎদার সমিতির উপদেষ্টা মোহাম্মদ মুসলিম বলেন, প্রায় দশ দিন হয়ে গেছে এখনও পর্যন্ত বড় ট্যানারি মালিকরা আসেনি। তবে চামড়া কিনতে তারা দ্রুত আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। মধ্যসত্ত্বভোগীদের তৎপরতার কারণে মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া কেনার ক্ষেত্রেও ছিল কারসাজি। ট্যানারি মালিকরা লবণ মেশানো প্রতি বর্গফুট চামড়া ৪০ টাকা নির্ধারণ করলেও আড়ৎদারদের কাঁচা চামড়া কিনতে হয় আরও বেশি দামে। লবণের দাম বেশি হওয়ায় কোনার পর থেকে প্রতি বর্গফুট চামড়া সংরক্ষণ করতে খরচ হয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬০ টাকা। এ অবস্থায় ট্যানারি মালিকরা এর থেকে বেশি দামে চামড়া না কিনলে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানান একজন কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী। শুধু তাই নয়। গত কয়েক বছরের চামড়া কেনার বকেয়াও পুরোপুরি পরিশোধ করা হয়নি। ফলে নতুন করে বিনিয়োগ করতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের এমনকি তাদের অনেকেই চড়া সুদে লোন নিয়ে চামড়া কিনেছেন। এ অবস্থায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে চরম শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রামে কাঁচা চামড়া আড়ৎদার সমিতির সদস্য সংখ্যা ১১২ জন। তারা নগরীর মুরাদপুর থেকে আতুরার ডিপো পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থাকা তিনশ’র বেশি গুদামে সংরক্ষণ করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত চামড়া। পাট ও পাটপণ্য রফতানিতে আয় বেড়েছে অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১০৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে কাঁচা পাট রফতানিতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার; পাটের সুতা ও কুন্ডলী রফতানিতে আয় হয়েছে ৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার এবং পাটের বস্তা ও ব্যাগ রফতানিতে আয় হয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত দ্রব্য রফতানিতে আয় হয়েছিল ৯১ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে এই খাতের রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১৪ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ কম।
×