ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিটি রফতানি আয় ’১৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার হবে

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আইসিটি রফতানি আয় ’১৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি সেক্টর থেকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। ক্রমাগত সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর পণ্য নেয়ার চাহিদাপত্র পাঠাচ্ছে। যে গতিতে প্রযুক্তি পণ্যের প্রসার ঘটছে, তাতে ২০১৮ সালের মধ্যে আইসিটি রফতানি এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এমনকি একদিন এ সেক্টর গার্মেন্টস শিল্পকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। সে উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। শনিবার রাজধানীর কাওরানবাজারের জনতা টাওয়ারে সফটওয়্যার টেকনোলজি ও আইসিটি পার্কে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। পলক বলেন, দেশের আইটি কোম্পানি এবং ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার ও কলসেন্টার কোম্পানিগুলোর সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর পণ্য রফতানির বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে ২০১৮ সালের মধ্যে আইসিটি রফতানি আয় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক এবং লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গবর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্পের যৌথভাবে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেনÑ এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরকার আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সভাপতি মোস্তাফা জব্বার ও সহ-সভাপতি ফারহানা রহমান, বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার এ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের সভাপতি আহমেদুল হক এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি। আইটি খাতের সামগ্রিক অবস্থার ওপর পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন এলআইসিটি প্রকল্পের টিম লিডার সামি আহমেদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আইসিটি রফতানি ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬শ’ মিলিয়ন ডলারে। ফ্রিল্যান্স সফটওয়্যার ডেভেলপার ও কলসেন্টার কোম্পানিগুলোর আয় যোগ হলে তা ৭শ’ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে এগিয়ে নিতে আইসিটি অবকাঠামো উন্নয়নসহ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে সরকার। যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক নির্মাণকাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। কালিয়াকৈরে ৩৩২ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। এ দুটি পার্কসহ দেশে ১২টি আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। শুধুমাত্র কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণের কাজ শেষ হলে এখানে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে দেশে আইটি পেশাজীবীর সংখ্যা ২০ লাখে উন্নীত করা। এজন্য বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচীর অধীনে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ৩০ হাজার দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যে ভাল অঙ্কের টাকা আয় করছেন। আগামীতে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা যে কোন দেশের সঙ্গে টিকে থাকতে সক্ষম হবে। দেশে বর্তমানে ৩শ’ কলসেন্টার চালু রয়েছে, যারা অনেক দেশের কাজ করে যাচ্ছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কলসেন্টারগুলো খোলা থাকছে। অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলোতে শ্রমের মূল্য বেশি হওয়ায় তারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মাধ্যমে এসব কাজ করে নিচ্ছে। পলক বলেন, এখনই আমরা পাশের দেশেসহ বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় উঠে এসেছি। ভারতে প্রতি ঘণ্টার জন্য তিন থেকে পাঁচ ডলার দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন আগেও আমাদের দেয়া হতো সর্বোচ্চ দুই ডলার। এখন আমরাও ভারতের কাছাকাছি টাকা পাচ্ছি। পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছি। আমাদের আর হাল্কা করে ভাবার কিছু নেই। যারা কাজ দিচ্ছে তারাও মেধার যাচাই করেই কাজ দিচ্ছে। আমাদের তরুণরা মেধাবী। তারা প্রতিযোগিতায় টিকে এখন দক্ষতার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। ২০২১ সালের আগেই আমরা তথ্যপ্রযুক্তির দিক দিয়ে বিশ্বের যে কোন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারব।
×