ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোগীর মৃত্যুর পর ঢামেকে চিকিৎসকবেশী যুবককে পিটুনি

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

রোগীর মৃত্যুর  পর ঢামেকে চিকিৎসকবেশী  যুবককে  পিটুনি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক সেজে এক যুবক এক রোগীর চিকিৎসা দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেলে সুমন (২৭) নামে ওই যুবকের হাতে বিপ্লব মণ্ডল (২৬) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়। রোগীর স্বজনরা সুমনকে এ ঘটনার পর গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় বাইরে রোগীর স্বজনরা বিক্ষোভ করে সেøাগান দিতে থাকে ‘সুইপার কেন চিকিৎসক, জবাব চাই, দিতে হবে।’ মৃত রোগী বিপ্লব মণ্ডলের বাবার নাম বিনোদ মণ্ডল। তিনি কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা। ছেলের মৃত্যুতে বিনোদ মণ্ডল কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, গত রবিবার কেরানীগঞ্জে মোটর-সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয় বিপ্লব। ওই দিনই তাকে ঢামেক হাসপাতালের ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ধীরে ধীরে সে সুস্থ হয়ে ওঠে। হাঁটাচলা করত। চিকিৎসকরা আমাদের আগামীকাল (শনিবার) সকালে রিলিজ করে দেয়ার কথা বলেছেন। বিনোদ ম-ল জানান, শুক্রবার বিকেলে বিপ্লব হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে তারা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রে ইনজেকশনের নাম লিখে তা দ্রুত কিনে আনতে বলেন। তারা ইনজেকশন কিনতে যাওয়ার সময় সুমন নামের এক যুবক এসে বিপ্লবের মুখে অক্সিজেনের মুখোশ চেপে ধরে। এরপর সুমন নিজ থেকেই বলে, রোগী মারা গেছে। রোগীর বাবা জানান, সুমনের গলায় চিকিৎসকের স্টেথসকোপ ছিল। তারা সুমনকে চিকিৎসক মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে খেয়াল করে দেখেন, ওই যুবক ঘটনার কিছুক্ষণ আগেও মেঝে ঝাড়ু দিয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল সূত্র জানায়, বিকেলে যখন বিপ্লবের স্বজনরা ওই যুবককে ধরে পিটুনি দিতে থাকে তখন খবর পেয়ে দায়িত্বরত আনসাররা সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যায়। ততক্ষণে হাসপাতালের সামনে গাড়ি নিয়ে হাজির হয় শাহবাগ থানার পুলিশ। সুমনকে পুলিশের গাড়িতে উঠানো হয়। হাসপাতালের সামনে তখন শত শত মানুষের ভিড়। রোগী মৃত্যুর কথা জানতে পেরে উপস্থিত লোকজনও উত্তেজিত হয়ে উঠে। তারা পুলিশী বাধা এড়িয়ে ওই যুবককে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিটুনি দিতে থাকে। তখন অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব গিয়ে মারধরকারীদের সরিয়ে দেয়। তারা সুমনকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতর নিয়ে যায়। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে অহেতুক ঝামেলা এড়াতে হাসপাতালের সামনে র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আটক সুমন সাংবাদিকদের জানায়, সে চার-পাঁচ মাস ধরে ২০০ নম্বরের ওয়ার্ডবয় হিসেবে চাকরি করছে। এক ওয়ার্ডমাস্টারের মাধ্যমে সে এই চাকরি পেয়েছে। এক চিকিৎসকের পরামর্শে সে ওই বিপ্লবের কাছে গেছে। শাহবাগ থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মৃতের স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওয়ার্ডবয় সুমনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওসি জানান, মৃতের স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। মৃত বিপ্লব মিটফোর্ডের একটি ওষুধের দোকানে কাজ করত।
×