মেঘের ভেলা
শ্যামলেন্দু পাল
দিনের বেলা যায় না দেখা
রাতের তারাগুলো
মন্টি মামা ঘন্টি বাজায়
বাতাস উড়ায় ধুলো।
নীল আকাশে মেঘের ভেলা
বেড়ায় শরৎ মাসে
স্বর্ণ থালা চাঁদের মুখ
খোকন দেখে হাসে।
পাখ-পাখালির কিচির মিচির
মন মাতানো গান
সবুজ শ্যামল সোনার বাংলা
গোলায় ভরা ধান।
বর্ষাকালে গাছের ডালে
বৃষ্টি ভেজা পাখি
ঝাপটা দিয়ে সরায় জল
কাজল কালো আঁখি।
ক্ষীণ নদীর বাঁকে বাঁকে
পানশি নায়ের ছবি
এসব দেখে পদ্য লিখেন
বাংলাদেশের কবি।
শরতের ছবি
ইসলাম তরিক
ছোট্ট খোকা আঁকছে খাতায়
শরৎ ঋতুর দৃশ্য,
এই ছবিটা হয় তো সেরা
চমকে যাবে বিশ্ব।
মনভোলানো এই ছবিটা
সবার থেকে ভিন্ন,
শরৎশোভায় এই ছবিটা
মন করেছে ছিন্ন।
নদীর কূলে কাশের বন
উঠান বেয়ে সিন্ধু,
শরৎকালের এই ছবিটা
ছড়ায় মায়ার বিন্দু।
গাছের ডালে ডাকছে পাখি
মাঠে বকের নৃত্য,
খোকার আঁকা এই ছবিটা
মাতায় সবার চিত্ত।
গাছের ওপর মেঘ এঁকেছে
মেঘের ফাঁকে সূর্য,
এই ছবিটা হোক না সেরা
বাজুক শরৎ তূর্য।
শরৎ ভালোবাসি
সোহেল রানা
মেঘগুলো সব দল বেঁধেছে
নীল আকাশের কোণে
করবে ভ্রমণ সবাই মিলে
পণ করেছে মনে।
নৌকা যেমন পালটা তুলে
চলে পরম সুখে
মেঘগুলো আজ চলবে তেমন
নীল আকাশের বুকে।
ঝকঝকে ঐ আকাশ দেখে
মেঘের মুখে হাসি-
হাত তুলে আজ বলছে যেন
শরৎ ভালোবাসি।
শরতের রূপ
বাসুদেব খাস্তগীর
কাশবন, শিউলি, সবুজের মাঠ,
ঐ দূরে নদী তীর, পাখিদের হাট।
গান গায় পাখি ওড়ে সারাদিন ক্ষণ,
রূপে রঙে দোলে যায় পাগলিয়া মন।
আকাশের নীলে ঐ সাদা সাদা মেঘ,
রূপ ঝরা পরিবেশ ছড়ায় আবেগ।
লুকোচুরি রৌদ্রের, এই আছে নেই,
রূপে মন মজে যেন হারায় যে খেই।
ভোর এসে দোর খোলে রূপে দেয় ডুব,
প্রাণ খুলে হাসে যেন শরতের রূপ।
নীলাকাশ
ইব্রাহীম রাসেল
শরতের কোলে
সাদা মেঘ দোলে
নীলশাড়ি নীলাকাশ
ভেসে ভেসে চলে
টুকরো মেঘের দলে
নানা কথা বলে
ছায়া পড়ে তার
নদী-পুকুর জলে
খালে আর বিলে
শাপলা-শালুক মিলে
কাশফুলের কানে
শরৎ বন্দনা চলে।
পাখির এদেশ
সৈয়দ মাশহুদুল হক
ময়না টিয়া শালিক দোয়েল
ঘুঘু শ্যামার দেশ
টুনটুনি আর কোকিল কোয়েল
চন্দনার ডাক বেশ।
হরেক রঙের পাখির এদেশ
মুখর থাকে ডাকে
মাছরাঙা আর গাঙচিলেরা
উড়ে নদীর বাঁকে।
বউ কথা কও ডাহুক পাখির
ডাক যে সুমধুর
মন যে শুনে যায় হারিয়ে
কোন সে সমুদ্দুর।
কাঠঠোকরা আর বাজ পাখিও
দেশের নামী পাখি
কাকাতুয়া সারস পাখি
বিরল দুটি পাখি।
চিল শকুন হারিয়ে গেলেও
আজো কিছু আছে
কাকের কথা কী আর বলি
থাকে ধারেকাছে।
কানিবগির চোখ যে থাকে
শুধুই পুঁটি মাছে।
আরো কত পাখি আছে
দেশেই তাদের বাস
কলতানে মুখর রাখে
এদেশ বারো মাস।
শরৎ রানী
হাসান ইকবাল
আকাশ জুড়ে মেঘের মেলা
শরৎ রানী হাসছে,
বিলে ঝিলে শাপলা শালুক
জলের উপর ভাসছে।
কাশের বনে বকের সারি
আকাশ পানে উড়ছে,
নদীর বুকে পরাণ মাঝি
নায়ের বাদাম জুড়ছে।
খেতে মজা তালের পিঠা
ভাদ্র আর আশি^নে,
ভোরের ঝরা শিউলি দেখে
শরৎকে আজ নে চিনে।