ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর প্রস্তুতি চলছে জোর গতিতে

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর প্রস্তুতি চলছে জোর গতিতে

মনোয়ার হোসেন ॥ প্রতিনিয়ত বিশ্ব চিত্রকলায় যুক্ত হচ্ছে নতুন শৈলী। পরিবর্তনশীল বাস্তবতার নিরীখে শিল্পের শরীরে ভর করছে বৈচিত্র্যের ছোঁয়া। সৃজনে এসেছে নবমাত্রা। আধুনিকতা আশ্রয়ী সেই নান্দনিকতা ধারণ করেই এশিয়ার বৃহত্তম শিল্প উৎসবে রূপ নিয়েছে দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত এবারের ১৭তম প্রদর্শনীর কর্মকা- এগিয়ে চলছে তুমুল গতিতে। প্রদর্শনীর কর্মকা- এগিয়ে নিতে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় খোলা হয়েছে এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা সেল। ইতোমধ্যে এই সেলে জমা পড়েছে সারাদেশের নবীন-প্রবীণ শিল্পীদের সৃজিত ৪০০টি শিল্পকর্ম। বিদেশী রাষ্ট্রের মধ্যে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কুড়িটি দেশের শিল্পীদের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ চূড়ান্ত হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। চারুকলা সেলের মাধ্যমেই এশিয়ার বৃহত্তম প্রদর্শনীটির কর্মকা- পরিচালিত হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগের চেয়ে আরও সমৃদ্ধ হবে ১৭তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ১৭তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার বিভিন্ন গ্যালারিতে মাসব্যাপী চলবে এই প্রদর্শনী। দেশ-বিদেশের শিল্পীদের সৃজনশীলতাকে ধারণ করে প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হবে চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র, স্থাপনাশিল্পসহ দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম। এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা সেল সূত্র জানায়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৮টি দেশকে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০টি দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণ চূড়ান্ত হয়েছে। অংশগ্রহণ চূড়ান্তকারী দেশগুলো হলোÑ ভারত, পাকিস্তান, চীন, ভুটান, বুলগেরিয়া, ফ্রান্স, গ্রিস, ইরান, ইতালি, ইন্দোনেশিয়া, লেবানন, পেরু, কম্বোডিয়া, রাশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, ফিলিস্তিন, কুয়েত ও দক্ষিণ কোরিয়া। চারুকলা সেলে জমা পড়েছে নানা মাধ্যমে গড়া সারাদেশের ৪০০ শিল্পীর শিল্পকর্ম। বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের পাঁচ সদস্যের বিচারকম-লী এসব শিল্পকর্ম নির্বাচন করবেন। বাছাইকৃত শিল্পকর্মগুলো ঠাঁই পাবে দ্বিবার্ষিকী এশীয় দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক উৎপল কুমার দাস জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের শিল্প ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে এই প্রদর্শনী। একইসঙ্গে শিল্পভিত্তিক বিশাল এই আয়োজনের মাধ্যমে প্রগতিশীল বাংলাদেশের পরিচয়টাও আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশিত হয়। দ্বিবার্ষিক এই শিল্প সম্মেলন দেশের চিত্রশিল্পীদের জন্য সমকালীন সমাজ, সাংস্কৃতিক ও নান্দনিক মূল্যবোধ, ইতিহাস, অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনকে মেলে ধারার একটি প্ল্যাটফর্ম। এছাড়া পৃথিবীর যাবতীয় অনিশ্চয়তার মধ্যেও অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া তৈরি করে এই প্রদর্শনী। এবারের ১৭তম প্রদর্শনীর লক্ষ্য হলো চিত্রকলার বিষয়-আশয়ের উপাদানসমূহ বিশেষ করে যোগাযোগ প্রযুক্তি, দৃশ্যকল্পের এবং নগরায়নের বিস্তার সম্পর্কে সবাইকে জানান এবং এই বিষয়টি তুলে ধরা যে, এসবের মধ্যদিয়ে শুধু ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিতেও বিপুল পরিবর্তন ঘটছে। গত ৩১ জুলাই শেষ হয়েছে দেশের শিল্পীদের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের নিবন্ধন প্রক্রিয়া। জমাকৃত শিল্পকর্ম থেকে নির্বাচিত শিল্পীদের মূল শিল্পকর্ম জমা দিতে হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। শিল্পীদের শিল্পকর্মের মূল ভাবনাসহ বিশদ বিবরণ জমা দিতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে শিল্পকর্মের শিরোনামের তথ্য, মাধ্যম, আকৃতি, ব্যবহৃত উপাদান, সৃষ্টির সময়কাল ইতাদি। প্রদর্শনীর শিল্পকর্ম নির্বাচনে নিয়োজিত পাঁচ সদস্যের বিচারকম-লীই প্রদর্শনীর তিনটি গ্র্যান্ড প্রাইজ ও ছয়টি অনারেবল মেনশন পুরস্কার বিজয়ীর শিল্পকর্ম নির্বাচন করবেন। দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের বয়স অবশ্যই ২২ বা তদুর্ধ হতে হবে এবং কমপক্ষে দুটি জাতীয় প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ইতোপূর্বে শিল্পকলা একাডেমির প্রদর্শিত শিল্পকর্ম এই প্রদর্শনীর জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না। শিল্পকর্মটি অবশ্যই ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারির পর সৃষ্ট হতে হবে। দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর জাতীয় কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
×