ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শোলাকিয়ায় তিন স্তরের নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শোলাকিয়ায় তিন স্তরের নিরাপত্তা

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ, ১১ সেপ্টেম্বর ॥ দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ-উল-আযহার জামাতের জন্য প্রস্তুত। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি জামাত আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এবার ঈদের জামাত নির্বিঘেœ করতে র‌্যাব-পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। ঈদের দিন শোলাকিয়া মাঠ ও এর আশপাশে তিন স্তরের নিরাপত্তায় অন্যান্য বাহিনী ছাড়াও মোতায়েন থাকবে তিন প্লাটুন বিজিবি। জামাতে অংশ নেয়া কোন মুসল্লি ঈদগাহে ছাতা, ব্যাগ ও মোটা জায়নামাজ নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। সম্প্রতি শোলাকিয়া ঈগগাহ মাঠ পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। গত ঈদ-উল-ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের পাশে জঙ্গী হামলার প্রেক্ষিতে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এবার ১৮৯তম ঈদ-উল-আযহার জামাত শুরু হবে সকাল ৯টায়। জামাতে ইমামতি করবেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসউদ। এদিকে দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আগমনের সুবিধার্থে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঈদের দিন দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। এর মধ্যে একটি ট্রেন ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় ছেড়ে সকাল ৮টায় পৌঁছবে। আর কিশোরগঞ্জ থেকে দুপুর ১২টায় ফিরতি ট্রেনটি ভৈরব পৌঁছবে দুপুর ২টায়। অপর ট্রেনটি ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে কিশোরগঞ্জ পৌঁছবে সকাল ৮টায়। পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, এবার ঈদের জামাতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে থাকছে বিপুলসংখ্যক র‌্যাব-পুলিশ, এপিবিএন ও আনসার সদস্য ছাড়াও বিজিবি সদস্যরা। এছাড়া সাদা পোশাকের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী মাঠের ভেতর-বাইরে কাজ করবে। তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ। ঈদের দিন মাঠের তিন দিকের সবগুলো প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া হবে। আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে সামনের দুটি গেটে মেটাল ডিটেক্টরে দেহ তল্লাশির পর মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। থাকবে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা। জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস ঈদের জামাতের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, গত ঈদের অপ্রত্যাশিত হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে এবার মাঠে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শোলাকিয়া পরিচিত করেছে কিশোরগঞ্জকে, পরিচিত করেছে সারাদেশকে। মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৮২৮ সালে জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। এদিকে, শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার ঘটনায় গত ১০ জুলাই পাকুন্দিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় শরিফুল ইসলাম ও তানিমের নাম উল্লেখসহ জঙ্গীদের সহযোগী আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এখন পর্যন্ত এ মালায় তানিম ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে আটক আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জের কারাগারে রয়েছে।
×