ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

এবার চামড়ার দাম কমছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

এবার চামড়ার দাম কমছে

এম শাহজাহান ॥ গতবারের চেয়ে প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ১০-১৫ টাকা কমিয়ে মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে ট্যানারি মালিকরা। তাদের এই প্রস্তাব না মেনে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই ক্ষেত্রে বর্গফুট প্রতি ৫-১০ টাকা কমিয়ে আজ শুক্রবার চামড়া খাত সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কোরবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। জানা গেছে, বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের কাছে চামড়ার মূল্য সংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাব বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নজরে আনা হলে তিনি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের পরামর্শ দিয়ে দাম ঘোষণা করার নির্দেশ দেন। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন জনকণ্ঠকে বলেন, তারা তো (চামড়া ব্যবসায়ীরা) অনেক কম মূল্য নির্ধারণ করেছিল। মন্ত্রণালয় তাদের প্রস্তাব না মেনে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দাম নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছে। আশা করছি, গতবারের চেয়ে দাম কিছুটা কমলেও যৌক্তিক হবে। ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। তিনি বলেন, বহির্বিশ্বে প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৬০ টাকা বর্গফুটে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তরসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা কিছুটা চাপে রয়েছেন। তাই এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে চামড়ার দাম নির্ধারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) তথ্য মতে, গত কোরবানির ঈদে সারাদেশ থেকে প্রায় এক কোটি পিস পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৬০ লাখ পিস চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে পণ্য তৈরি ও রফতানি করা হয়েছে, কিন্তু এখনও গত বছরের প্রায় ৪০ লাখ পিস চামড়া মজুদ রয়েছে ট্যানারিগুলোতে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের বিপুল সংখ্যক পশুর চামড়া মজুদ থাকায় এবার ট্যানারি মালিকদের কাঁচা চামড়া কেনার আগ্রহও কম। এছাড়া হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরজনিত সমস্যাতো রয়েছে। এসব কারণে কোরবানির কাঁচা চামড়া পাচারেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, গত বছর ঢাকায় গরুর কাঁচা চামড়ার প্রতিবর্গ ফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা আর ঢাকার বাইরে গরুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম অনেক কমে গেছে। এটা বিবেচনায় নিয়েই এবার দাম নির্ধারণ করা হবে। তিনি জানান, কোরবানির আগে হাজারীবাগ থেকে সাভারে সব ট্যানারি যেতে পারবে না। এজন্য আরও সময় লাগবে। তাই ওই সময় কোথায় কাঁচা চামড়া সংগ্রহ ও মজুত করা হবে সেটাই এখন বড় সঙ্কট হয়ে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, জাতীয় সম্পদ চামড়া রক্ষায় ব্যবসায়ীরা আন্তরিক। তবে বিভিন্ন অবকাঠামোজনিত সমস্যার কারণে এবার কাঁচা চামড়ার দাম কমে যেতে পারে।
×